ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

সাক্ষ্য বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে খালেদার আবেদন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৫
সাক্ষ্য বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে খালেদার আবেদন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

ঢাকা: দুর্নীতির দুই মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 
বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে সোমবার (১৫ জুন) শুনানি হতে পারে।


 
এর আগে ২৫ মে মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপপরিচালক হারুনুর রশিদ সাক্ষ্য বাতিল চেয়ে আবেদন করলে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার তা খারিজ করে দিয়ে পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য ১৮ জুন দিন ধার্য করেন।
 
খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান জানান, বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ২৫ মে এ সাক্ষ্য বাতিল চেয়ে আবেদন করলে বিশেষ জজ আদালত তা খারিজ করে দেন। এ খারিজাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করা হয়েছে।
 
৫ মে ধার্যদিনে মামলা দুটির সাক্ষ্যগ্রহণের অংশ হিসেবে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আংশিক সাক্ষ্য দেন হারুনুর রশিদ। ওই দিন খালেদা জিয়া আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তাই, তার পক্ষে আইনজীবীরা সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত এ আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন।
 
২৫ মে (সোমবার) ধার্যদিনে হারুনুর রশিদের সাক্ষ্য বাতিলের আবেদন জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে এ আবেদন নামঞ্জুর করে ১৮ জুন দুই মামলায়ই হারুনুর রশিদকে আসামি পক্ষের জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
 
অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ মোট আসামি ছয়জন। অপর পাঁচজন হলেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, খালেদা জিয়ার শাসন আমলের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
 
অপরদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি চারজন। অপর তিনজন হলেন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর সাবেক একান্ত সচিব ও বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র  নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
 
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাক্রমে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই ও ২০১১ সালের ৮ আগস্ট মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তদন্ত শেষে মামলা দুটির চার্জশিট দেওয়া হয়। অভিযোগ গঠনের আগে মামলা দুটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। আবেদন দুটি খারিজ করেন হাইকোর্ট। গত বছর ১৯ মার্চ খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায়।

এ অভিযোগ গঠন বিধিসম্মত হয়নি দাবি করে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। শুনানি শেষে এ আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। এরপর মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে এবং বিচারক বাসুদেব রায়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবারও রিট করেন খালেদা জিয়া। শুনানি শেষে গেল বছর ২৫ মে বিভক্ত রায় দেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি ফারাহ মাহবুব তার আদেশে মামলা দুটির বিচারিক কার্যক্রম ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন এবং নিম্ন আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

অপর বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ রিট দুটি খারিজ করেন। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি এক আদেশে বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের একক বেঞ্চকে ‘তৃতীয় বেঞ্চ’ ঘোষণা করেন। তৃতীয় বেঞ্চ একই বছর ১৯ জুন এক রায়ে রিট দুটি খারিজ করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৫
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।