ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

বিজিবি সদস্য অপহরণ জাতির জন্য লজ্জার

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৫
বিজিবি সদস্য অপহরণ জাতির জন্য লজ্জার ড. আসাদুজ্জামান রিপন

ঢাকা: বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য অপহরণের ঘটনা জাতির জন্য লজ্জা বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। এছাড়া  ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে যেন অপমানজনকভাবে তুলে নিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য বিজিবিকে পেশাগতবাবে সক্ষম করে তোলার জন্যও সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি।



নয়াপল্টনে শনিবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি করেন।

বিএনপির মুখপাত্র রিপন বলেন, বিজিবির নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে মায়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপি ধরে নিয়ে গেছে। লুঙ্গি পরিহিত নায়েক রাজ্জাককে হাতকড়া পড়া ছবি ছাপা হয়েছে সেদেশের পত্রিকায়। এ চিত্র দেখে লজ্জায় আমাদের মাথা হেট হয়ে আসে।

তিনি বলেন, বিরোধীদলের আন্দোলন চলার সময়ে বিজিবির ডিজি আব্দুল আজিজ বলেছিলো, ‘অস্ত্র থাকে কেন ? এটা ব্যবহার করার জন্য। ’ আমরাও বিশ্বাস করি, অস্ত্রের ব্যবহার করতে হয় আইনগতভাবে। কিন্তু অস্ত্র হাতে থাকার পরও বিজিবি সদস্যরা অপহৃত হয়। এটা যাতে ভবিষ্যতে না হয়, সেজন্য বিজিবিকে পেশাগতভাবে আরও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।   

এছাড়া ভবিষ্যতে  বিজিবি যেন এমন অপমানজনক অবস্থায় না পড়ে, সেজন্য মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের তরফে কড়া বার্তা দেয়ারও দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও যেন বজায় থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশের সংঘাত ও রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আমরা রাজনীতিতে সৌহার্দ্য ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাই। রমজান উপলক্ষে আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম দলের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে। কিন্তু সরকার আমাদের আহ্বানে সাড়া না দেওয়ায় আমরা ব্যথিত।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল ও সরকার মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল । দেশে একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। সরকার রাষ্ট্রীয় শক্তি দিয়ে আন্দোলন কার্যত স্তব্ধ করে দিয়েছে। তারা এতে সফলও হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে সরকার বিরোধীদলের নেতাদের আটক করে। আন্দোলন শেষে নেতাকর্মীরা কারাগার থেকে বের হয়ে আসে। কিন্তু সরকার আমাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিচ্ছে না । সরকার রাজনৈতিক সংস্কৃতি মানছে না। অথচ বর্তমানে আমাদের সরকারবিরোধী কোন আন্দোলন কর্মসূচি নেই। আমরা সেই সংস্কৃতি আবার শুরু করতে চাই এবং তা রোজার মাস থেকেই। এরই অংশ হিসেবে আমাদের দলের চেয়ারপারসনের ইফতারের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আমরা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে গিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এখনও সময় শেষ হয়ে যায়নি। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা থেকে আমরা এখনও বের হতে পারি। আমার আশা করবো সরকার দেশে রাজনৈতিক সৌহার্দে্যর সংস্কৃতি চালু করতে অবিলম্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ সকল কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দেবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, পবিত্র রমজান সামনে রেখে ভেজাল বিরোধী অভিযান শুরু করতে হবে। রোজা শুরু হলেই বাজারে জিনিস পত্রের দাম বেড়ে যায়। রোজাদারদের রোজাকে সহজ করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাই দ্রব্যমূল্য মানুষের নাগালের মধ্যে রেখে সহযোগিতা করুন।

এ জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর সক্রিয় ভূমিকা দাবি করে তিনি বলেন, বাজারের প্রতিটি দ্রব্যমূল্যের তালিকা টানিয়ে দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক ও যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ দফতর বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৫
এমএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।