ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

আ’লীগের সম্মেলন

পরিবর্তন আসছে না সভাপতি-সা.সম্পাদক পদে

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
পরিবর্তন আসছে না সভাপতি-সা.সম্পাদক পদে

ঢাকা: আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে না। আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর জাতীয় সম্মেলনে সভাপতির পদে কে আসছেন এ বিষয়টি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর কাছে অত্যন্ত স্পষ্ট।

তারা সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার বিকল্প চিন্তা করছেন না।

তবে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব কে পাচ্ছেন সেটির বিষয়ে আকর্ষণ রয়েছে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর।

দলটির একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশারাফুল ইসলামের স্বপদে বহাল থাকা অনেকটাই নিশ্চিত।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, আওয়ামী লীগের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে শেখ হাসিনাকে সভাপতির দায়িত্বে আনা হয়। এর সঙ্গে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর আবেগ জড়িয়ে আছে। আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনাকেই আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করেন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী। দলীয় প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কাউকে এই মুহূর্তে তারা চিন্তা করছেন না।

এদিকে আসন্ন জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা দলের প্রধান থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করলেও দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী তাকে ছাড়তে চান না। ১৫ অক্টোবর জাতীয় কমিটির সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ৮১ থেকে ২০১৬, পঁয়ত্রিশ বছর। আর কতো..? আমি চাইবো সবাই নতুন নেতা নির্বাচিত করুন। সভায় তার এ বক্তব্যের সবাই বিরোধিতা করেন।

এর আগে গত ২ অক্টোবর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমার তো ৩৫ বছর হয়ে গেছে। এখন দল যদি আমাকে অবসরের সুযোগ দেয় তাহলে আমি সব থেকে বেশি খুশি হবো। নতুন নেতা নির্বাচন করা হলে সব থেকে বেশি আনন্দিত হবো আমি। এমন কথা শোনার সঙ্গে-সঙ্গে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা ‘না’-‘না’ বলে উঠেছিলেন।

১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮১ সালের পর ১৯৮৭, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০২, ২০০৯ এবং ২০১২ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

এদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক পদও অপরিবর্তিত থাকছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকেই দলের সাধারণ সম্পাদক রাখতে চান। দলের মধ্যে তার অধিকতর আস্থাভাজন হিসেবেই রয়েছে সৈয়দ আশরাফের অবস্থান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা ও সরকারের মন্ত্রী জানান, স্বাভাবিকভাবে দলের সভাপতি তাকেই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চাইবেন যার উপর সার্বিক বিষয়ে নির্ভর করা যায়। সৈয়দ আশরাফের উপর এরকম দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই নির্ভর করা যায় বলে শেখ হাসিনা মনে করেন।

দলটি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, সৈয়দ আশরাফের জানা-বোঝা, রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার বিষয়টিও শেখ হাসিনার জানা। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী পরিস্থিতিতে তিনি রাজনৈতিক দুরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, জাতীয় চার নেতা যারা জেল হত্যার শিকার হন তাদের অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে। দলের বাইরেও তার একটা স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে।

এই সার্বিক কারণে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তৃতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের  সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাবেন বলে দলের অভিজ্ঞ নেতারা মনে করছেন। বর্তমানে সৈয়দ আশরাফ দ্বিতীয় বার দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ২০০৯ সালের ২৪ জুলাইয়ের সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রথম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর আগে ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে তিনি দীর্ঘদিন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি দ্বিতীয় দফায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।