ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘দেশে এখন নির্বাচিত কোনো সংসদ ও সরকার নেই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
‘দেশে এখন নির্বাচিত কোনো সংসদ ও সরকার নেই’ আদালতে পৌঁছেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ‘দেশে এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত কোনো সংসদ ও সরকার নেই। সবকিছুই একতরফা ও একদলীয় ভিত্তিতে চলছে। যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সেই গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত’।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের অস্থায়ী আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে এসব কথা বলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘তিন যুগ আগে মানুষের ডাকে ও ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে আমি রাজনীতির অঙ্গনে পা রাখি।

সেদিন থেকেই বিসর্জন দিয়েছি নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে’।

‘রাষ্ট্রক্ষমতার অবৈধ দখলদাররা চান,নি আমি রাজনীতিতে থাকি। আমি রাজনীতি না করলে তারা আমাকে অনেক বেশি সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। রাজনীতি করলে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে আমাকে ভয়-ভীতিও দেখানো হয়েছিলো। সবকিছু উপেক্ষা করে আমি রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখি’।

তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় চেয়েছি, বাংলাদেশ যেন গণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত হয়। মানুষের যেন অধিকার থাকে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকে। বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকে’।

‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করা হচ্ছে। জারি করা হচ্ছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। প্রায় চার দশকের স্মৃতিবিজড়িত বসত-বাড়ি থেকে আমাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমাকে আমার বাসা ও রাজনৈতিক কার্যালয়ে বালির ট্রাক দিয়ে কয়েক দফায় দীর্ঘদিন অবরোধ করে রাখা হয়েছে। আমি আমার অফিসে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় সে সময় বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে’।

‘সেই অবরুদ্ধ অবস্থাতেই আমি মৃত্যু সংবাদ পাই বিদেশে চিকি‍ৎসাধীন আমার একটি সন্তানের’- এ কথা বলার পর খালেদা জিয়ার কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত কোনো সংসদ ও সরকার নেই। সবকিছু একতরফা ও একদলীয় ভিত্তিতে চলছে। যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সেই গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত’।

‘যে তথাকথিত সংসদ গঠন করা হয়েছে, সেই সংসদের বেশিরভাগ সদস্য নির্বাচিত হননি। বাকি সদস্যদেরকেও ভোটাররা নির্বাচিত করেননি। প্রহসনের মাধ্যমে তাদেরকে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ৫ শতাংশ ভোটারও ভোটকেন্দ্রে হাজির হননি। প্রহসনের সংসদ এবং সেই সংসদের মাধ্যমে গঠিত সরকার কখনো বৈধ হতে পারে না’।

জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পত্নী। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক। তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের অন্যতম সফল অধিনায়ক। তিনি বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও একজন নন্দিত সফল রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন’।

বেলা সোয়া ১২টা থেকে ৫৩ মিনিট বক্তব্য পাঠের পর মুলতবির আবেদন জানান খালেদা। তার এ আবেদনে আত্মপক্ষ সমর্থনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিখিত বক্তব্য পাঠ অব্যাহত রয়েছে। তার এ আবেদনে আগামী ০২ নভেম্বর অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
এমআই/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।