ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার রায় পড়া চলছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার রায় পড়া চলছে

ঢাকা: ১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ফ্রিডম পার্টির গ্রেনেড/বোমা হামলা মামলার রায় দিচ্ছেন আদালত।

রোববার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১২টা থেকে রায় পড়ে শোনাচ্ছেন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিপরীতে স্থাপিত ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জাহিদুল কবিরের অস্থায়ী আদালত।

গত ১৫ অক্টোবর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ২৯ অক্টোবর ধার্য করা হয়।

একই ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক আইনের মামলাটির রায়ও রোববার জজকোর্টের নিজ এজলাসে বসে দেবেন একই আদালত। গত ১৬ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলাটির রায়ের দিনও ২৯ অক্টোবর ধার্য হয়।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর আলোচিত মামলা দু’টির রায় দিচ্ছেন আদালত।

দুই মামলারই আসামি ছিলেন ১৬ জন। তাদের মধ্যে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আসামি সৈয়দ ফারুক রশীদ ও বজলুল হুদার ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য দু’জন লিয়াকত হোসেন ওরফে কালা লিয়াকত ও রেজাউল ইসলাম খান ফারুক ওরফে ফারুক রেজা মারা যাওয়ায় তাদের নাম যথাক্রমে ২০০৫ সালের ২০ জুলাই ও ২০০৯ সালের ১৪ জুন মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

বর্তমান ১২ আসামির মধ্যে চারজন গোলাম সারোয়ার মামুন, জর্জ মিয়া, মো. সোহেল ওরফে ফ্রিডম সোহেল ও সৈয়দ নাজমুল মাকসুদ মুরাদ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

তাদেরকে রায় শোনাতে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

জামিনে থাকা পাঁচ আসামি হলেন- গাজী ঈমাম হোসেন, খন্দকার আমিরুল ইসলাম কাজল, মো. মিজানুর রহমান, হুমাউন কবির ওরফে কবির ও মো. শাজাহান বালু।

তাদের মধ্যে চারজন আদালতে হাজির হয়েছেন, মো. শাজাহান বালু আসেননি।  

অন্য তিন আসামি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদ, জাফর আহম্মদ মানিক ও মো. হুমায়ুন কবির হুমায়ুন পলাতক রয়েছেন।

১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্যরাতে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর এ হামলা চালান ফ্রিডম পার্টির ১০/১২ জনের একটি দল। এ সময় শেখ হাসিনা বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু ভবনে কর্মরত পুলিশ হাবিলদার মো. জহিরুল ইসলাম হত্যা প্রচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ১৬ জনকে আসামি করে ধানমণ্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট রাত ১২টা থেকে দুইটার মধ্যে ১০/১২ জনের একটি দল ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা করেন। তারা এ সময় গুলি চালিয়ে ও বোমা ফাটিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করেন তারা। হামলাকারীরা ‘কর্নেল ফারুক-রশীদ জিন্দাবাদ’ শ্লোগান দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।

১৮৮৯ সালেরই ০৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে দেয় পুলিশ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ০২ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয় এবং সিআইডিকে পুনঃতদন্তের আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৬ জনকে আসামি করে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি’র এএসপি মো. খালেক উজ্জামান।

সরকারি সিদ্ধান্তে ২০০৯ সালের ০৯ মে থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিপরীতে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত ভবনে দণ্ডবিধি আইনে হত্যাচেষ্টা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলে।

একই বছরের ১৬ জুলাই ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে বিচার শুরু হয়।

ওই বছরের ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ, শেষ হয় গত মার্চে। চার্জশিটভুক্ত ১৩ জনের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন এ মামলায়।  তবে আসামিপক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিলেন না।  

গত ১২ মার্চ ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের পরীক্ষা করা হয়।

গত ১১ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ।    

মামলাটি প্রথমে ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে জেলা দায়রা জজ এবং পরে মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি হয়। সবশেষে ২০১২ সালের ২৯ মার্চ বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বদলি করেন মহানগর দায়রা জজ।

এর আগে গত ২০ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা উদ্ধার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার অন্য দুই মামলায় দশজনকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৩ জনকে ১৪ বছর করে ও ৯ আসামিকে ২০ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।