ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনে না এলে নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়বে: নাসিম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৮
নির্বাচনে না এলে নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়বে: নাসিম জনসভায় বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে এখন আর অন্য কোনো উপায়ে নির্বাচন হওয়ার সুযোগ নেই। তাই যারা নির্বাচনে আসবে না, তারা নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়বে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহীতে ১৪ দলের বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মহানগরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

 

নাসিম বলেন, গতবার আমরা খালি মাঠে গোল দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার আর খালি মাঠে গোল দিতে চাই না। খেলে গোল দিতে চাই। তাই বিএনপি-জামায়াতকে বলছি, ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। ষড়যন্ত্র বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসুন। কারণ এবার নির্বাচনে না এলে আগামীতে বাটি চালান দিয়েও আপনাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। তাই নির্বাচনের বিকল্প শুধুই নির্বাচন। আমরা নির্বাচন চাই, আমরা ভোট চাই। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, যারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নেই, কোনো সংলাপ নেই। তদের সঙ্গে কোনো আপোষ নয়। সংসদ নির্বাচন হবে, যথা নিয়মেই হবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি বাংলাদেশের নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটই নির্বাচিত হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে বিজয় ছাড়া আমাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই। মেসি গোল মিস করতে পারে, নেইমার গোল মিস করতে পারে কিন্তু শেখ হাসিনার গোল মিস হবে না। কারণ মানুষ জানে, বিএনপি-জামায়াত আবারও ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হবে। দেশে আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু হবে, রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। তাই ঐক্য করে বা জোট করে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ জানে কেবল ১৪ দলীয় জোটই মুক্তিযুদ্ধের ধারক ও বাহক। তাই বলতে চাই, আপনারা বিগত সিটি নির্বাচনে যেভাবে নৌকাকে ভোট দিয়ে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে নির্বাচিত করেছেন। ঠিক সেভাবে সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর প্রতিটি আসনে নৌকার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন সহায়তা করবেন।  
আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বুধবার (১০ অক্টোবর)  ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় দেওয়া হবে। এ রায় নিয়ে কেউ টু শব্দ করলে তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। জনসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ অন্যরা।  ছবি: বাংলানিউজরাজশাহীর মাটি আওয়ামী লীগের দূর্জয় ঘাটিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে। তখন একটি কুচক্রী মহল উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে। তবে যারা দেশের স্বাধীনতাকে মানতে চায় না, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাদের বিচার হবেই। এ উন্নয়নের গণজোয়াড় অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে হবে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

বুধবার যে রায় হবে, সেখানে মানুষ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ফাঁসি দেখতে চায় বলেও উল্লেখ করেন নানক।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, আগে শুনতাম জমি বর্গা দেওয়া হয়, গরু বর্গা দেওয়া হয়। কিন্তু এখন দেখছি, রাজনীতিও বর্গা দেওয়া হয়, নেতৃত্বও বর্গা দেওয়া হয়। কিন্তু আমি জানি রাজনীতি বর্গা দেওয়া যায় না। আজকে বিএনপি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া করে তাদের ইচ্ছে মতো নাকি নির্বাচন করতে চায়। আমি বলতে চাই, দেশের ষড়যন্ত্রকারীদের এ ঐক্য টিকবে না। তারা যেভাবে রাজনীতি বর্গা দিয়েছে, ঠিক সেভাবেই রাজনৈতিকভাবে দেওলিয়া হয়ে যাবে।  

এর আগে, দুপুর থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছান। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ রাজশাহীর সাহেব বাজার সমাবেশস্থল নেতাকর্মীদের ভিড়ে একাকার হয়ে উঠে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো প্রাঙ্গণ।

সমাবেশ স্থলে নারীদের উপস্থিতিও ছিলো ব্যাপক। সেখানে বক্তারা বলেন, জাতীয় ঐক্যের নামে বাংলাদেশকে নিয়ে বিএনপি জোট ষড়যন্ত্র করছে। এটাকে প্রতিহত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকাটা জরুরি। এ ঐক্যবদ্ধতা সংবিধান রক্ষার ক্ষেত্রেও জরুরি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধান অনুযায়ীই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

১৪ দলের এ বিভাগীয় জনসভায় সভাপতিত্ব করেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিটি মেয়ের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, জাসদ সভাপতি শরিফ নূরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া, রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আখতার জাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, জন আজাদি লীগের সভাপতি এসকে সিকদার, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।  

জনসভা পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধরাণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও জাসদের রাজশাহী মহানগর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মাহামুদ শিবলী।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
এসএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।