সংলাপ শেষে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। এ সময় সংলাপে কি আলোচনা হলো হলো—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সন্তুষ্ট নই।
তবে আর কোনো কথা বলেননি তিনি। পরে বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা তফসিলের বিষয়ে কথা বলেছিলাম। তফসিল যাতে সময় নিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তফসিল দেওয়ার বিষয়টি সরকারের নয়। এটি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার।
আজকের সংলাপ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অর্জন কী- এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সব সময় কি সব অর্জন হয় না কি? এটা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে।
‘আগেই বলেছি আমি সন্তুষ্ট নই,’ যোগ করেন তিনি।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা একে একে গণভবনে প্রবেশ করেন। সংলাপে যোগ দেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও।
মোট ১০টি গাড়িতে করে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসা থেকে শান্তিনগর হয়ে গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন। প্রথমেই ছিল ড. কামালের গাড়ি, এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতাদের গাড়ি।
সংলাপের জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১৬ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয় আওয়ামী লীগকে। এর মধ্যে বিএনপির পাঁচ প্রতিনিধি হলেন— মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস।
পড়ুন>>
** সংলাপে গেলেন না গয়েশ্বর, বন্ধ মোবাইল
তাদের সঙ্গে ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম; গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন ও সহসভাপতি তানিয়া রব; ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মনসুর ও আ ব ম মোস্তফা আমিন এবং স্বতন্ত্র হিসেবে ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সংলাপের আড়াই ঘণ্টা আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে শেষ মুহূর্তে যোগ করা হয় আরও পাঁচজনের নাম।
নতুন যোগ হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন বিএনপির ও তিন জন গণফোরামের। বিএনপির দুই নেতা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
অন্যদিকে, গণফোরামের তিন জন হলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহ। তবে সংলাপে উপস্থিত হননি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সংলাপে ১৪ দলীয় জোট থেকে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।
গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের জন্য চিঠি দিলে পরদিন ২৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, তারা সংলাপে বসতে রাজি। ৩০ অক্টোবর সকালে সংলাপের দিনক্ষণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠি নিয়ে দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ যান ড. কামালের বাসায়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
এমএইচ/এমএ/