রোববার (৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
**সংলাপ আর আন্দোলন একসঙ্গে চলে না: কাদের
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে শোনা যাচ্ছে, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, লিগ্যাল ম্যাটার নিয়ে ১০ বছর ধরে দু’টি মামলা চলছে, সময়মত হাজিরা দিলে অনেক আগেই রায় হয়ে যেতে পারতো, সেজন্য মামলার কাজ বিলম্বিত হয়েছে।
চিকিৎসার জন্য প্যারোল বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, সেটা তারা এসে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারেন, সেটা যদি তারা চায় আলোচনার দরজা তো খোলা আছে।
তবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি বা চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে স্টানবাজি করা হয়েছে, এখন তো চিকিৎসা নিয়ে কোনো কথা নেই। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতিটা বেশি করা হয়েছে। ’
বিএনপি-ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট আবারও সংলাপের চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ছোট পরিসরে আলোচনা করা যায়। সেদিনও একই কথা হয়েছে আলোচনার দুয়ার তো বন্ধ হবে না।
সংলাপের মাধ্যমে কি দূরত্ব কমে এসেছে- প্রশ্নে কাদের বলেন, দেখাদেখি চোখাচোখিও ছিল না, সেটাত হলো, খোলামেলা পরিবেশে তারা কথা বলেছেন। যে যা বলতে চেয়েছেন স্বাধীনভাবে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। আবার বসতে চাইলে আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে। আমরা ৭ তারিখের পর যেতে চাইছি না। রাজনৈতিক দল ২০০ এর কাছাকাছি, আজ ১৪ দল কাল জাতীয় পার্টির সঙ্গে, দিনে ও রাতে মিলে দু’টি সেশন করতে চাই। এরপর ইলেকশন রিলেটেড কাজে জড়াতে হবে।
সমঝোতা কি হবে- প্রশ্নে কাদের বলেন, সংলাপ হয়েছে এটাই তো ইতিবাচক অগ্রগতি। এটি একটি ইতিহাস, দেশের ইতিহাসে সরকার প্রধান এভাবে এ পর্যায়ে সংলাপ করেনি। এটি শীর্ষ পর্যায়ে সামিট বৈঠকের মতো। জনমতে তো… যাদের জন্য রাজনীতি পাবলিক পারসেপশন ভালো।
‘বিদেশি কূটনীতিকরা দেখা হলেই বলতেন একটা সংলাপ করেন, সে সংলাপটা হচ্ছে। কিছু দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। কিছু বিষয় আছে সভা-সমাবেশে লেবেল প্লেইং ফিল্ড, সভা-সমাবেশ করতে চাইলে বাধা আসবে বলে মনে করি না। সরকারের কোনো সুবিধা নির্বাচনকালীন সময়ে নেব না।
সংলাপে কি জমাট বাধা বরফ গলে যাবে- এ বিষয়ে কাদের বলেন, এ পর্যন্ত যা হয়েছে তা পজিটিভ। আন্দোলনের কথা বলছেন, সংলাপ আর আন্দোলন একসঙ্গে চলে না। সংলাপ যখন তারা চান আবারও বসতে চান তাহলে আন্দোলন কেন, আমার প্রশ্ন।
নির্বাচনকালীন সরকারের আকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এবার ছোট হবে কিনা তা ঠিক হয়নি, শরিকদের সঙ্গে আলাপ হবে।
তফসিল পেছানোর দাবি বিষয়ে কাদের বলেন, আমরা ইলেকশন কমিশনকে কিছু বলবো না, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে সরকারের অনেকেই তেঁতুল হুজুর বলে, তাদের সংবর্ধনা নিচ্ছেন- এ বিষয়ে কাদের বলেন, এটা একটা দোয়া শোকরানা, রিসেপশন দিচ্ছে না। আনপ্লেজেন্ট রিমার্ক বা অ্যাবিউজড রিমার্ক থেকে বিরত থাকতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই সতর্ক করে দিয়েছেন। কাউকে পার্সোনালি অ্যাটাক করা পজিটিভ রাজনীতি না।
শোকরানা মাহফিলের কারণে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা পেছানোয় সমালোচনার বিষয়ে কাদের বলেন, পরীক্ষা তো হয়ে যাচ্ছে।
পরীক্ষা পেছানোতে একসঙ্গে তিনটি পরীক্ষা দিতে হচ্ছে- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের রাজনীতির ব্যবস্থা এখন ইলেকশনকে সামনে রেখে আমরা সবাই চাপের মুখে। ওরা একটু ত্যাগ স্বীকার করবে আমি তাদের কাছে অনুরোধ করছি যে আমাদের একেবারে অনিচ্ছাকৃত, পরিস্থিতির কারণে আমরা বলবো তারা বিষয়টি সুনজরে দেখবে।
নির্বাচন সামনে রেখে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ না করতে নেতাদের বলা আছে বলে জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৮/আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা
এমআইএইচ/আরআর