সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে সোমবার (৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।
সংলাপের মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের কিছু কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়গুলো সারসংক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী সংলাপের ফলাফল জাতির উদ্দেশ্যে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেবেন। আগামী ৮ বা ৯ নভেম্বর এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
কাদের বলেন, দ্বিতীয়বার ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করবো। এবার চিঠি দেইনি, মৌখিকভাবে গণফ্রন্টের জেনারেল সেক্রেটারি মোস্তাফা সাহেবকে জানিয়েছি। আশা করি আজ তারা নাম পাঠিয়ে দেবেন। আমরা ১০ জন থাকবো। তারা কতজন পাঠায়…। কাল থেকে আমাদের দুটো করে সংলাপ চলবে।
আগামী ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এর পরপরই আমাদেরই প্রোগ্রাম আছে। এই ডায়ালগগুলোর সামারি তৈরি করা হচ্ছে, আমরা তিনজনকে দায়িত্ব দিয়েছি। বক্তব্যগুলো রেডি করে প্রাইম মিনিস্টার, আমাদের সভাপতি বক্তব্য দেবেন প্রেস কনফারেন্সে। এটার রেজাল্ট কী, রেজাল্ট তো জানাতে হবে।
কাদের বলেন, ৭ তারিখে সংলাপ শেষ হবে, সম্ভবত ৮ বা ৯ তারিখ সংবাদ সম্মেলন।
ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা সম্পর্কে কাদের বলেন, দাবি তো ২/৩টি মেনে নিয়েছি। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে প্রাইম মিনিস্টার কোন কোন বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করতে পারি তিনি তার বক্তব্যে পরিষ্কারভাবে বলেছেন।
‘তবে কিছু কিছু বিষয় আছে আমাদের এরিয়ায় শিডিউলের পর থাকবে। যেমন বিদেশি পর্যবেক্ষক। তারা আসবে, মনিটর করবে- এখানে সরকার কোনো প্রকার বাধা দেবে না। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড- এটা আচারণ বিধির মধ্যে যা আছে আমরা মেনে চলবো, সরকার এবং সরকারি দল অক্ষরে অক্ষরে আমরা মেনে চলবো। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, তার যে প্রাপ্য সুবিধা তিনি সরকার প্রধান হিসেবে পান সেগুলো ইউজ করবেন না। আমরা বলেছি, মন্ত্রী-এমপিরা তাদের এলাকায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেবেন না। এবং মন্ত্রীরা ফ্লাগ ব্যবহার করবেন না, শুধু সিকিউরিটির বিষয়টি, এটা তো মানুষের নিরাপত্তা। মন্ত্রীরা ফ্লাগ নিয়ে গেলে লেভেল থাকে না, সমতাও থাকে না। এটা অসমতা হয়ে যায়। এসব বিষয়ে আমরা একমত।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি পতাকা ইউজ করবো না, আমার দলীয় পতাকা নেব। জাতীয় পতাকা ইউজ করবো না যখন আমি ক্যাম্পেইনে যাবো। ’
বাকি দফার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেগুলোর মধ্যে হয়তো কোনোটা আংশিক মেনে নেওয়া যায়, ৮ তারিখে যেখানে শিডিউল ঘোষণা হবে এই অবস্থায় সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। আমার কাছে মনে হয় না সংবিধানের বাইরে কোনো দাবি মেনে নেওয়ার সুযোগ এই মুহূর্তে আছে। তারা যদি সংবিধানের ভেতরে আর কোনো পরিবর্তনের পক্ষে যুক্তিসম্মত কোনো প্রস্তাব করেন সেটা গ্রহণ করার মতো হলে অবশ্যই আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
যুক্তফ্রন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে সংসদ ভেঙে দিতে হবে- এ বিষয়ে কাদের বলেন, সংসদ তখন নিষ্ক্রিয় থাকবে। সংসদ সদস্যদের কোনো কার্যকর ক্ষমতা থাকবে না।
ঐক্যফ্রন্ট ভাঙতে পারে কিনা- প্রশ্নে কাদের বলেন, আমরা ভাঙতে চাই না, আমরা চাই তারা ঐক্যবদ্ধ থাকুক। আমরা ভাঙতে যাবো কেন, তাহলে আমরা সংলাপে বসলাম কেন? আমরা যদি তাদের ভাঙতে চাইতাম, তাহলে প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বসলেন কেন? আমরা চাই না।
সংলাপে প্রাপ্তি সম্পর্কে কাদের বলেন, দেশের সরকারপ্রধান একটা সংলাপ করছেন খোলামনে, দুয়ার অবারিত করে, এটিই তো একটা অগ্রগতি। আমি তো বলি এটা ঐতিহাসিক অগ্রগতি। আমাদের দেশে এটা কখনও হয়নি। মান্নান ভূইয়া-আব্দুল জলিল আলোচনা করেছেন, রেজাল্টও নেই। কিন্তু এই যে সরকারপ্রধান ডায়লগে বসেছেন, এটা কিন্তু আমরা দলের লোকেরাও অবাক হয়েছি। আবাক বিস্ময়ে আমরা তার কাছে শুনে সম্মত হয়েছি। আমরা ডায়লগের বিরুদ্ধে ছিলাম। আমাদের লিডারের সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের আস্থা শতভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ