মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাম জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমসহ বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সিপিবির সভাপতি সেলিম বলেন, দেশে এখন লুটপাটতন্ত্র চালু হয়েছে। এজন্য ক্ষমতায় থাকাটা অত্যাবশ্যক হয়ে গেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রহসন ও তামাশার নির্বাচনও অপরিহার্য হয়ে গেছে। আমরা এভাবে চক্রাকারে ঘুরপাক খাচ্ছি। যেখানে পাকিস্তান আমল থেকে অবাধ নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি, সেই সংগ্রাম এখনও পরিপূর্ণভাবে শেষ করতে পারিনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপি বিরোধীদলে থাকলে অবাধ নির্বাচনের জন্য পাগল হয়ে যায়। কিন্তু একই দল যখন ক্ষমতায় থাকে তখন তারা নির্বাচনকে কিভাবে দক্ষতার সঙ্গে প্রহসনমূলক করা যায় সেই তৎপরতা করে। এজন্য দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি।
সেলিম আরও বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বাইরে বিকল্প গড়ে তোলার জন্য, আমাদের লড়াই অব্যাহত রেখেই আমরা নির্বাচন সংগ্রামে অবতীর্ণ হবো।
আমরা মনে করি এই নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না, এটা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হবে। আমরা যে ধরণের নির্বাচন চাই সে ধরণের নির্বাচন হবে না। সেজন্য আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া মানেই নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলে ধরে নেওয়া যায় না, বরং একটা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করছি, আমাদের বৃহত্তর সংগ্রাম নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ করা।
সাইফুল হক বলেন, দেশে নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হয়নি। সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে মানুষ বিশ্বাস করে না। মানুষের বিশবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও এমনব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেহের যে ভাষা, সেই ভাষাতেই বোঝা যায়, সরকার যে নির্বাচনের ছক দিয়েছে, সেই ছক ধরে নির্বাচন কমিশন হাঁটছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি সমাধান না করে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা এক তরফা নির্বাচনের জন্য সরকার ফাঁদ পেতেছে বলে জনমনে ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের দায়িত্বশীল আচরণ ও ভোট নিয়ে শঙ্কা দূর করার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছি। একইসাথে এক তরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের ফাঁদে পা না দিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বামজোটের শরিক দল বাসদের নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের নেতা আবদুস সাত্তার, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলেনর জুলহাস নাঈন বাবু উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৮
এমআইএস/আরআর/এএটি