ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রশাসনের ৭০ কর্মকর্তা দলবাজ, ইসিকে ঐক্যফ্রন্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৮
প্রশাসনের ৭০ কর্মকর্তা দলবাজ, ইসিকে ঐক্যফ্রন্ট ইসিতে অভিযোাগ জমা দিয়ে আসেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপি নেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৭০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ‘অতি দলবাজ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিএনপি-গণফোরামের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ওই কর্মকর্তাদের ‘চিহ্নিত বিতর্কিত কর্মকর্তা’ হিসেবে অভিহিত করে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছে সরকারবিরোধী বৃহৎ এ রাজনৈতিক জোট।

ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাকে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল চিঠিটি ইসিতে পৌঁছে দেয়

চিঠিতে যেসব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অতি দলবাজ এবং চিহ্নিত বিতর্কিত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এডিশনাল আইজিপি (প্রশাসন), র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি),  ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার, এডিশনাল আইজি (টেলিকম ইউনিট), নৌ-পুলিশ, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার, রংপুর মহানগর পুলিশের অধিনায়ক, ডিএমপির অ্যাডিশনাল কমিশনার পদের দু’জন, ডিএমপির অ্যাডিশনাল কমিশনার, ঢাকা সিটি এসবির ডিআইজি, ডিআইজি (প্রশাসন), ডিআইজি (অপারেশন), ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার, খুলনা রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি, ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার (ডিবি), সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার, ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি, ডিএমপির ডিসি (তেজগাঁও), ডিসি (রমনা), ডিসি (ডিবি-উত্তর), কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ডিসি, সিএমপির দুই ডিসি, ডিএমপির এক এডিসির নাম রয়েছে।
 
নাম রয়েছে পাবনা, সিরাগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, নওগাঁ, চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, ভোলা, বরিশাল, সিলেট, শেরপুর, ময়নসিংহ, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারেরও।
 
সিইসির উদ্দেশে চিঠিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনাকে জানাচ্ছি যে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আমরা মাঠ প্রশাসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে আহ্বান জানিয়েছি। আপনিও ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণাকালে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সব দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। ’
 
‘কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশবাসী লক্ষ্য করছে যে, তফসিল ঘোষণার পর ১০-১২ দিন সময় অতিবাহিত হলেও আপনাদের এসব প্রতিশ্রুতির দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না। উপরন্তু সরকারের সাজানো পুলিশ প্রশাসনের অতি দলবাজ ও চিহ্নিত বিতর্কিত কর্মকর্তারা নির্বাচনী মাঠ দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। অথচ কমিশন এ সব বিতর্কিত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ’
 
‘এ অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহারপূর্বক নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি। ’
 
চিঠিতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা মাঠ প্রশাসনের অবশিষ্ট কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছি এবং বিতর্কিত কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহারের দাবি জানাবো। ’
 
‘অবিলম্বে অন্যান্য সব পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থল জেলার বাইরে বদলির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও পুনরায় জোর দাবি জানাচ্ছি। ’
 
এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত অন্য একটি চিঠিতে জনপ্রশাসন সচিব, ইসি সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম ও খুলনা; চট্টগ্রাম, ভোলা, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, নড়াইল, ময়মনসিংহ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, রাজশাহী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকদের (রিটার্নিং অফিসার) প্রত্যাহার চেয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।
 
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ নভেম্বর। বাছাই ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ ডিসেম্বর।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।