রোববার ( ২৫ নভেম্বর) বিকেল থেকে কমলের সমর্থকেরা মিছিল-মিটিং ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ সময় তারা ‘কমল ছাড়া কেউকে মানি না, মানবো না’ বলে শ্লোগান দেয়।
এর আগে ২০০১ সালে নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে রামু বাইপাস চত্বরে একটি নির্বাচনী জনসভায় বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট খালেকুজ্জামান চৌধুরীর আকস্মিক মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি থেকে লুৎফর রহমান কাজলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে খালেকুজ্জামানের সমর্থকেরা বিভিন্নস্থানে কলা গাছ রোপণ করে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি জানান।
এর পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে একই ঘটনা ঘটে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও দলের কিছু নেতার বিরোধিতার মুখে পরবর্তীতে মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এতে কমলের সমর্থকেরা কলা গাছ রোপণ করে এর প্রতিবাদ জানায়। এ প্রতিবাদের ১১ দিনের মাথায় দল সিদ্বান্ত পরিবর্তন করে আবার সাইমুম সরওয়ার কমলকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়।
জানা গেছে, জোটগত সিদ্বান্তের কারণে গত নির্বাচনে চকরিয়া-পেকুয়া নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-১ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওযা হলেও এবার সে আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলমকে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। যে কারণে কক্সবাজার-৩ আসনটি এবার জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী জিয়া উদ্দিন বাবলু নির্বাচন করবেন। শনিবার (২৪ নভেম্বর) রাত থেকে নির্বাচনী এলাকায় এমন খবর ছড়ি পড়ায় কমলের সমর্থক ও কিছু কিছু সাধারণ ভোটারেরা রাস্তায় নেমে পড়েন।
রোববার বিকেল চারটার দিকে রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়রে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এসময় বিক্ষুব্দ সর্মথকরো ‘কমল ছাড়া কাউকে মানি না, মানব না’ বলে শ্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে তা বিশাল আকারে রূপ নেয়। পরে সমাবেশ শেষে বিভিন্ন স্থানে কলা গাছ রোপণ করে এ সিদ্বান্তের প্রতিবাদ জানানো হয়।
মিছিল শেষে চৌমুহনী স্টেশনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ উল আলম, রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোসেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য শামসুল আলম চেয়ারম্যান ও নুরুল হক কোম্পানি, ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, চাকমারকুলের ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, রামু স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, কক্সবাজার-৩ আসনে সাইমুম সরওয়ার কমল ছাড়া বহিরাগত নেতা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মেনে নেবে না। সাধারণ জণগণের দাবি উপেক্ষা করে বহিরাগত বা মহাজোটের শরিক দলের কাউকে এখানে মনোনয়ন দেওয়া হলে ভোটাররা প্রত্যাখান করবে।
রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রিয়াজ উল আলম জানান, রামু-কক্সবাজারের ভোটারদের কাছে সাইমুম সরওয়ার কমল পরিক্ষিত নেতা। এখানকার মানুষ কমল ছাড়া কাউকে মেনে নেবে না। কিন্তু একটি মহল কমলের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করার নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এ সিদ্বান্তের প্রতিবাদে কাল সোমবার আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে রামু উপজেলার ১১ ইউনিয়নে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এমনকি যে কোনো ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে প্রয়োজনে হরতালের মতো কঠিন কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮,
এসবি/এসএইচ