আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি যে, ভাগ্নে সাজুর মনোনয়নের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি উচ্চ নৈতিক মান প্রদর্শন করে অবিলম্বে স্বীয় পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, সিইসিকে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজে লাগানোর জন্যই তার ভাগ্নেকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে।
তিনি বলেন, আপনাদের স্মরণে আছে ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব ডক্টর শাহ মোহাম্মদ ফরিদ স্বেচ্ছায় মুখ্য সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, যাতে স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন কোনোভাবেই উঠতে না পারে। কারণ সেই নির্বাচনে তার ভাই বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষায় কথা বলে আসছেন ইসি সচিব হেলালুউদ্দীন, দ্রুত দলবাজ ইসি সচিবকে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। কারণ আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিরামহীন রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
‘বিগত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের রূপকার ইসির তৎকালীন সচিব বর্তমান পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের পরামর্শে নির্বাচন কমিশনকে পরিচালনা করেন হেলালুউদ্দীন। ক্ষমতাসীন মহলের অন্দরে অবাধ বিচরণ নির্বাচন কমিশন সচিবের। ’
গত ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে হেলালুউদ্দীন আহমদ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে তিনি পরিকল্পনা কমিশনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারদের ডেকে গত ১৬ নভেম্বর বৈঠক করেছেন। পরবর্তীতে ২০ নভেম্বর চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার, তার এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ডেকে সরকারের পক্ষে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘এসব ঘটনায় নির্বাচনী আইনের প্রতি তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ইসি সচিবের ভয়ে তটস্থ। সরকারের ইচ্ছে অনুযায়ী দক্ষ ও নিরপেক্ষদের বদলি করে নির্বাচন ভবনটি তিনি আওয়ামীপন্থি ক্যাডারদের দিয়ে সাজিয়েছেন। ’
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বস্তসূত্রে জেনেছি, ফেনীসহ কিছু কিছু জেলার পুলিশ সুপার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) ডেকে নিয়ে সভা করে তাদের সরকারের পক্ষে কাজ করার চাপ দিচ্ছেন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানির বিষয়ে ব্রিফ করছেন। তারা বলছেন এসিআর আমাদের হাতে, নির্বাচনের রেজাল্ট আমাদের হাতে দেবেন, এসিআর নিয়ে যাবেন। ইতোমধ্যে আমরা ফেনীসহ অন্য জেলার বেশ কিছু পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে পত্রের মাধ্যমে অবহিত করেছি।
রিজভী বলেন, রোববার যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় বিএনপির উঠান বৈঠকে পুলিশ তাণ্ডব চালিয়েছে। এ ময় কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বৈঠকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূবের পক্ষে মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিষয় নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া আলাপ-আলোচনা চলছিলো।
মনোনয়নের চিঠি দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনোনয়নের চিঠি দেওয়ার ব্যাপারে এখনও অফিসিয়ালি আমরা কিছু জানি না। জানতে পারলে আপনাদের জানিয়ে দেবো।
প্রায় শতাধিক নেতা চিঠি পেয়েছেন এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এমএইচ/এএ