সোমবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ কথা জানান।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যাদের মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটাকে ‘দলীয় বিষয়’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যেটা দিয়েছি সেটা প্রেসের জন্য না।
‘আমরা যেটা করেছি, আমাদের জোটের শরিকরাও একইভাবে মনোনীত প্রার্থীদের চিঠি দেবে। যেন মনোনয়নপত্রটা জমা দিতে পারেন। আমরা পরীক্ষা-পর্যবেক্ষণের পর আমাদের জোটগত তালিকা প্রকাশ করবো। আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তারপর চূড়ান্ত তালিকা দেবো, যেন শরিকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। যেটা এখন পর্যন্ত হয়নি। আমরা বোঝাপড়ার মাধ্যমেই অচিরেই জোটগত তালিকা দেবো। মনোনয়নের নামে আমরা বানরের পিঠা ভাগাভাগি করতে চাই না। আমরা কৌশলগত কারণে একটু যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা দেবো। অধিক গ্রহণযোগ্যকে দেবো, যেন জয়লাভ করতে পারি। আমরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। প্রতিপক্ষের যে স্ট্র্যাটেজি-কৌশল সেটাও আমাদের দেখতে হবে। আমরা প্রতিপক্ষের কৌশল দেখেই চূড়ান্ত তালিকা দেবো। প্রতিপক্ষের অবস্থান ও কৌশল দেখতে হবে। নির্বাচনে কৌশল একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা কৌশলে কারও কাছ থেকে পিছিয়ে থাকতে চাই না। ’
একই আসনে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কিছু আসনে দু’জনের চিঠি দিয়েছি। এসব প্রার্থী যখন মনোনয়নপত্র জমা দেবে, এরপর আর একটি মাঠ জরিপ হবে, তখন দেখবো যে জনগণের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য, তাকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবো। আবার কোথাও কোথাও প্রার্থী ডিফল্টার হয়ে যাওয়ার বিষয়ও আছে। যদি কেউ ঋণখেলাপী বা অন্য কোনো কারণে বাদ পড়ে যান, সেজন্য দুইজনের নাম দিয়েছি। আমরা যাকেই দেই, আমাদের উদ্দেশ্য নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া।
মহাজোটের শরিকদের জন্য ৭০টির বেশি আসন থাকছে না, পুনরায় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের জোটের শরিকদের জন্য ৬৫-৭০টি আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এখানে জাতীয় পার্টি যেহেতু বড় শরিক, কাজেই তাদের বেশি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে যাকেই দেই, অবশ্যই বিজয়ী হতে পারবে এমন প্রার্থীকেই বেছে নেওয়া হবে। আমরা তো জেতার জন্য নির্বাচন করছি। সিটের লড়াই না নম্বরের লড়াই। কে কতোটা সিট পেলো, সেই লড়াই হবে। কাজেই জনগণের কাছে যে বেশি গ্রহণযোগ্য তাকেই দেওয়া হবে। সিট গুনলে নম্বর হারাবো।
শেষ পর্যন্ত বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন থেকে সরে যাবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমরা এমনটা ভাবছি না। আমরা চাই নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। প্রতিপক্ষ আমাদের চিন্তার ভগ্নাংশ। তবে তারা ভগ্নাংশ সেটা বলছি না।
পাবনায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নের চিঠি না পেয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের গণফোরামে যোগদান প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ড.কামাল হোসেনই যখন আওয়ামী লীগে নেই, (সুলতান মোহাম্মদ) মনসুর নেই, (মাহমুদুর রহমান) মান্না নেই, যারা যাচ্ছে তারা কি এরচেয়ে বড় পদের কেউ? এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। এতে আমাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বৈ কমেনি।
নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের অন্য কারও বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড়ানোর সম্ভাবনার ব্যাপারে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদ্রোহ মানেই বহিষ্কার। আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে দেওয়া হবে। যতোই জনপ্রিয় হোক, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে বহিষ্কার।
বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্ত করছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা এরইমধ্যে বুঝতে পেরেছে জিততে পারবে না। সর্বশেষ ড. কামাল হোসেন চমক দিয়েছেন। কী চমক দিয়েছেন? তিনি সিইসির (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) পরিবর্তন চান। একমাস পরে নির্বাচন, এখন যারা সিইসির পরিবর্তন চায়, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, যুগ্ম-সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, সহ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮/আপডেট ১৬৪৮ ঘণ্টা
এসকে/এসএম/টিএ/এইচএ/