তবে এবার প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও প্রতিটি আসনে একজন করে দ্বিতীয় প্রার্থী রাখা হয়েছে। তাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনই কেবল বোঝা যাবে কারা নামছেন চূড়ান্ত লড়াইয়ে।
রাজশাহীর সংসদীয় আসনের মধ্যে রাজশাহী-০১ (গোদাগাড়ী-তানোর) ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও তার স্ত্রী আভা হক, রাজশাহী-০২ (সদর) আসনে মিজানুর রহমান মিনু ও সাহিদ হাসান, রাজশাহী-০৩ আসনে শফিকুল হক মিলন ও মতিউর রহমান মন্টু, রাজশাহী-০৪ আসনে আবু হেনা ও আবদুল গফুর, রাজশাহী-০৫ আসনে নাদিম মোস্তফা ও নজরুল ইসলাম, রাজশাহী-০৬ আসনে আবু সাঈদ চাঁদ ও নুরুজ্জামান খান মানিক।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ব্যারিস্টার আমিনুল হকসহ প্রতিটি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। দলীয় মনোনয়ন পেলেও কোনো কারণে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) তাদের প্রার্থিতা বাতিলও হয়ে যেতে পারে। তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে দলটি সবকটি আসনেই দ্বিতীয় প্রার্থী রেখেছেন। তাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
এদিকে রাজশাহীর চারটি সংসদীয় আসনে পুরোনোরাই দলীয় মনোনয়ন পেলেও দুইটি আসনে আনা হয়েছে পরিবর্তন। সোমবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল থেকে দলীয় প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক মনোনয়নের চিঠি দেওয়া শুরু করে বিএনপি। তবে সন্ধ্যায় রাজশাহীর ছয়টি আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা মনোনয়নের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রথম মনোনয়ন পেয়েছেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন এবং রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ।
এছাড়া পুরাতনদের মধ্যে রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রাজশাহী-২ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা, রাজশাহী-৫ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফা।
রাজশাহী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বাংলানিউজকে মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, কৌশলগত কারণে দুইজন করে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। তবে সেটা কী তা বলা যাবে না। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেন জেলা বিএনপির এ নেতা।
তবে সদর আসনে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বাংলানিউজকে বলেন, এমন কোনো বিষয় সম্পর্কে তার বক্তব্য দেওয়া ঠিক হবে না। এটি দলের মহাসচিব দিতে পারেন। তবে সদর আসনের জন্য তার হাতে মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মিনু।
এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তবে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে রাজশাহী-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন প্রবীণ নেতা কবির হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেরাজ উদ্দিন মোল্লার কাছে পরাজিত হন। এ আসনে এবার বিএনপির নতুন প্রার্থী হলেন অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। আর রাজশাহী-৬ আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি প্রয়াত আজিজুর রহমান। তিনিও বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার আলমের কাছে পরাজিত হন। আর এ আসনে এবার বিএনপির নতুন মুখ আবু সাঈদ চাঁদ।
এছাড়া রাজশাহী-৪ আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আবদুল গফুর। তিনি ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কাছে পরাজিত হন। এবার এ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবু হেনা। এর আগে ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা সাবেক সচিব আবু হেনা। জঙ্গি ইসুতে দলবিরোধী বক্তব্য দেয়ায় ২০০৮ সালে বিএনপির মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত এবং দল থেকে বহিষ্কার হন এ সাবেক আমলা। সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত আবু হেনাকে সম্প্রতি দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এবার নির্বাচনে আবারও তিনি বিএনপির টিকিট পেলেন।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া দুই নেতার মধ্যে একজন আবু সাঈদ চাঁদ বর্তমানে রাজশাহী কারাগারে বন্দি রয়েছেন। এ বছরের ১ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর চারঘাটে বোমা বিস্ফোরণ এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে চাঁদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড এবং ভোটকেন্দ্র দখল, সরকারি কাজে বাধাদানসহ নানা অভিযোগে ডজনখানেক মামলা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এসএস/আরআইএস/