প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ড. কামাল হোসেন সাহেবসহ যে সুশীল বাবুরা এক জায়গায় হয়ে গেছেন সবাই অনেক নীতির কথা বলে, তাদের সেই নীতি কোথায় গেল? কার অধীনে আজকে তারা মনোনয়ন নিচ্ছেন?
মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে গণভবনে সশস্ত্র বাহিনীর দেড় শতাধিক সাবেক কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা এক সময় আইনকেই মানেনি তাদের কাছ থেকে মনোনয়ন নিয়ে তারা নাকি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাকে দুর্নীতিবাজ বলে বক্তৃতা দিয়েছে, তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, আজকে সব ভিড়েছে গিয়ে কোথায়? গণতন্ত্র রক্ষা করতে, গণতন্ত্রের অভাব কোথায়?
এই বিএনপি’র আমলেই দেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, যে দলের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় আছে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে তারা দলের সদস্যও হতে পারবে না। কাজেই যারা দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত, এতিমের অর্থ আত্মস্যাৎকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের জন্য সাজাপ্রাপ্ত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত সেই সাজাপ্রাপ্ত মানুষের নেতৃত্বে চলে গেছেন আমাদের এই সুশীল বাবুরা, গণতন্ত্র উদ্ধার করতে, এটা বাংলাদেশের এক দুর্ভাগ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে, সামরিক শাসন জারি করে মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনকে কলুষিত করেছিল, দেশের হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে যারা হত্যা করেছিল, একের পর এক ক্যু সৃষ্টি করে যারা হত্যাযজ্ঞ চালায়, বিচারাধীন যুদ্ধাপরাধী, সাত খুনের আসামিদের যারা ছেড়ে দেয় তাদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোনো গণতন্ত্র তারা আনতে চায়, সেটা আমার প্রশ্ন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল ওয়াদুদ, রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) হারুনুর রশীদ, এয়ার কমোডর (অব.) কাজী দেলোয়ার হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ডা. কানিজ ফাতেমা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বি এম মোজাম্মেল হক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষে মাঠে নামা অবসরপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে সেনা বাহিনীর ১০৮ জন, নৌবাহিনীর ২০ জন ও বিমানবাহিনীর ২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনজন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, ১৮ জন মেজর জেনারেল, ১৯ জন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল, সাতজন কর্নেল, ২২ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, ৩৩ জন মেজর, চারজন ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন।
নৌ কর্মকর্তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত তিনজন রিয়ার অ্যাডমিরাল, সাতজন কমডোর, আটজন ক্যাপ্টেন, একজন লে. কমান্ডার রয়েছেন।
বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন এয়ার ভাইস মার্শাল, এয়ার কমডোর দু’জন, গ্রুপ ক্যাপ্টেন ১০ জন এবং সাতজন উইং কমান্ডার রয়েছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক এসব কর্মকর্তারা।
** নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন দেড়শ সাবেক সেনা কর্মকর্তা
বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এমইউএম/এসএম/এসআরএস