রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও নয় উপজেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নিজ নিজ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন।
শেষদিনে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার এস.এম আব্দুল কাদেরের কাছে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল।
এছাড়া রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) নিজ সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং গোদাগাড়ী উপজেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের জন্য মনোয়নপত্র দাখিল করেন বিএনপি নেতা সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক এবং তার স্ত্রী আভা হক।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) পর্যন্ত রাজশাহীর ছয়টি আসনের জন্য ৫৯ জন প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে এ সময়ের মধ্যে দাখিল করেন মাত্র নয়জন।
তাই শেষদিনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে সকাল থেকেই প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের ঢল নেমেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের সামনে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনিক জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের দফতর থেকেই মনোনয়নপত্র বিতরণ এবং জমা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দফতর থেকেও মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। বুধবার বিকেলে দাখিল কার্যক্রম শেষ হচ্ছে।
তিনি জানান, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে এ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র তুলেছেন আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি, বিএনপির ব্যারিস্টার আমিনুল হক, তার স্ত্রী আভা হক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুল মান্নান, বাসদের আফাজ উদ্দিন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস, মুজিবুর রহমান ও সাইদুর রহমান। এদের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত জমা দেন সালাহ উদ্দিন ও আবদুল মান্নান।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মনোনয়নপত্র তুলেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, বিএনপির মিজানুর রহমান মিনু ও সাহিদ হাসান, জাসদের আবদুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফয়সাল হোসেন, সিপিবির এনামুল হক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ রানা। তাদের মধ্য থেকে জমা দিয়েছেন শুধু সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। আর জাসদের আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী ফজলে হোসেন বাদশাকে সমর্থন দিয়েছেন।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের আয়েন উদ্দিন এমপি, বিএনপির শফিকুল হক মিলন, মতিউর রহমান মন্টু, কবির হোসেন, কামরুল মনির, রায়হানুল আলম ও অধ্যাপক সিরাজুল হক, জাতীয় পার্টির শাহাবুদ্দিন বাচ্চু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফজলুর রাহমান, এলডিপির মনিরুজ্জামান, সাম্যবাদী দলের সাজ্জাদ আলী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজিদুর রহমান ও আতিকুর রহমান। এদের মধ্যে মঙ্গলবার জমা দিয়েছেন সাজ্জাদ আলী ও আতিকুর রহমান।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগের ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি, বিএনপির আবু হেনা, আবদুল গফুর, তোফাজ্জল হোসেন, আশফাকুর রহমান, ডিএমডি জিয়াউর রহমান ও ওয়ালিউজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তাজুল ইসলাম এবং যুক্তফ্রন্টের সরদার মোহাম্মদ সিরাজুল করিম। জমা দিয়েছেন শুধু এনামুল হক ও তাজুল ইসলাম।
পুঠিয়া ও দুর্গাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৫ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা, দলটির নেতা ডা. মনসুর রহমান, আহসানুল হক মাসুদ ও ওবায়দুর রহমান; বিএনপির নাদিম মোস্তফা, নজরুল ইসলাম, ইসফা খায়রুল হক, মতিয়া হক, আনোয়ারুল ইসলাম ও মাহামুদা হাবিবা; ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রুহুল আমিন, জাকের পার্টির শফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির আবুল হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফরুক মনোনয়নপত্র তুলেছেন। আসনের বর্তমান এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা এবার দলের মনোনয়ন পাননি। পেয়েছেন ডা. মনসুর রহমান। রাজশাহী-৫ আসন থেকে রুহুল আমিন ও শফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছেন সাতজন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিএনপির আবু সাঈদ চাঁদ, আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, বজলুর রহমান ও নুরুজ্জামান খান; ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুস সালাম সুরুজ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক। এদের মধ্যে শুধু আবদুস সালাম তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকি যারা নির্বাচনে থাকতে চান তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে বিকেল ৫টার মধ্যে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২ ডিসেম্বর। বৈধ প্রার্থীরা আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। পরদিন ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তারপর প্রার্থীরা ১১ ডিসেম্বর থেকেই প্রচারে নামতে পারবেন।
আর একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এসএস/আরআর