এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার কোনো উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের নেই। বরং বিএনপি-ই বারে বারে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছে।
মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
পড়ুন>> বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে: কাদের
এ সময় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপুমণি, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ না করলেও খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার পাপে আমি ভিকটিমাইজ। আমার অন্যায়ে আমি ভুক্তভোগী। এতে অন্যদের কি করার আছে। আপনি অপরাধ করেছন। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হাতে নাতে প্রমাণ আছে। এখন রায় বিরুদ্ধে গেছে, এটা আদালতের সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগের কোনো হাত নেই।
‘জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। আমরা কেনো নিশ্চিহ্ন করতে যাবো! বিএনপি একটা বড় দল এই দলটা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরোধী দল হিসেবে থাকলেও আমাদের কোনো ক্ষতি নেই। ’
তিনি বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র হচ্ছে দুই চাকার বাইসাইকেল। এর একদিকে সরকারি দল ট্রেজারি বেঞ্চ অন্যদিকে বিরোধী পক্ষ। বিরোধী পক্ষকে বাদ দিয়ে তো সংসদীয় গণতন্ত্র হয় না। আমাদের সমস্যা নেই। তবে ইতিহাস বলে জিয়া পরিবারই বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বারবার সব ধরনের চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুকে কারা হত্যা করেছে? বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কারা পুরস্কৃত করেছে? বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিরাপদে বিদেশে কারা পাঠিয়েছে? বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে কে? বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার যাতে না হয় সেজন্য সংবিধানে কারা পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচারের পথ বন্ধ করতে প্রভিশেন দিয়েছে? অস্বীকার করতে পারে তারা?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার উপর কী কোনো হামলা হয়েছে? অন্তত ২০ বার প্রাণনাশের চেষ্টা করে আমাদের নেত্রীর ওপর হামলা হয়েছে। এটা সবাই জানে। প্রতিষ্ঠিত সত্য। আমরা তো তাদের নিশ্চিহ্ন করতে চাইনি। আদালতের আদেশে হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে আমরা তাদেরকে কোনভাবে হয়রানি-হুমকি এসব করতে যাইনি। বরং জিয়া পরিবারই বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বারবার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করেছে।
তাবলিগ জামাতের গোলযোগে তৃতীয় পক্ষের কোনো ইন্ধন আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে একটা অশান্তি, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি কারা করতে চায় এটা বোঝাই যায়, কারণ তারা জেনে গেছে, বুঝে গেছে আগামী নির্বাচনে তাদের জয় লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই।
‘সে কারণে তারা আজকে নির্বাচন বানচাল করার জন্য দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চক্রান্ত করছে। নির্বাচনের পরিবেশটাকে তারা বিঘ্নিত করতে চাইছে। এজন্যই তারা নিজেরা কোনো আন্দোলন করতে না পেরে এখন অন্যদের ইস্যুতে নাক গলাচ্ছে। অন্যদের ইস্যুতে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে কি-না সেই অপচেষ্টা তাদের আছে। ’
সম্প্রতি ঐক্যফ্রন্টের নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব একটা সভায় বলেছেন সরকারি দলই নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে। বিষয়টি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এটা হাস্যকর বক্তব্যের বিশ্ব রেকর্ড, হাস্যকর কথার বিশ্ব রেকর্ড। বরং আমি অনুরোধ করবো তারা যেন সরে না যায়।
‘আওয়ামী লীগ সরে গেলে তো ঐক্যফ্রন্ট বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে অবশ্য মাঠে জাতীয় পার্টিও আছে। থার্ড হবে নাকি ফোর্থ হবে বলা মুশকিল। ’
বিএনপি নির্বাচনে না এলে সরকারের কোনো ক্ষতি আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আছে, সারা বছর দেশে বিদেশে নালিশ আর নালিশ। আবার নালিশ শুরু হয়ে যাবে যে সরকার তাদের নির্বাচন করতে দেয়নি, বাধা দিয়েছে। সরকার কারসাজি করে দূরে সরে রেখেছে এ অপবাদ যাতে না ছড়াতে পারে সেজন্য তাদের মাঠে থাকাটাই ভালো। তার এখন এদিক সেদিক করছে। দিন যতিই যাচ্ছে ততই বিএনপির ভাঙ্গাহাট আরো ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙ্গা হাট জমছে না। সেজন্য এসব বলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৮
এসএম/এমএ