ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নাটোরে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ এক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৮
নাটোরে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ এক গুলিবিদ্ধ রিয়ন

নাটোর: আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে নাটোরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শাহরিয়ার হোসেন রিয়ন নামে এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 

এছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও ছাত্রলীগ কর্মী রুবেল আহত হয়েছেন।
 
মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে শহরের বড়গাছা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা পাওয়া গেছে।  

এদিকে, ঘটনার পর থেকে দক্ষিণ বড়গাছা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
 
গুলিবিদ্ধ শাহরিয়ার হোসেন রিয়ন এন এস সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং শহরের বড়গাছা এলাকার আলম সোনারের ছেলে। আহত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও ছাত্রলীগ কর্মী রুবেল আহমেদকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী জালাল উদ্দীন আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, আধিপত্য ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও নবাব সিরাজ উদ দ্দৌলা (এনএস) সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন রিয়নের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো।
 
বিকেল ৩টার দিকে দুই জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
 
এতে শাহরিয়ার হোসেন রিয়ন গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রতিপক্ষের মারপিটে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও ছাত্রলীগ কর্মী রুবেল আহমেদ গুরুতর আহত হন। এ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিক ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখনও কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে রিয়নের বাবা আলম সোনার অভিযোগ, রিয়নের ফুফাতো বোন রোজিনা খাতুনের স্বামী বালু ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে বেশ কয়েকদিন ধরে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি জেমস। চাঁদা না পেয়ে সোমবার মধ্যরাতে মনিরুজ্জামানের বালুবাহী ট্রাকটি নিয়ে আসেন জেমস।
 
মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে রোজিনা খাতুন অভিযোগ জানাতে থানায় গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার পিছু নেয় জেমস ও তার দলবল। দক্ষিণ বড়গাছার একটি ময়দা মিলের সামনে অবস্থানরত ট্রাকটির সামনে গেলে রোজিনাকে মারতে উদ্যত হয় জেমস ও তার লোকজন।
 
এসময় রোজিনা দৌড়ে রিয়নের বাড়ির সামনে যায়। স্টেশন এলাকা ঘুরে দক্ষিণ বড়গাছা ছোটমোড়ে ভাইয়ের বাড়ির সামনে রোজিনাকে দেখেই এগিয়ে আসে জেমসের নেতৃত্বে রিপন, রাজীব, হাসিবুল, সালমান, মকবুলসহ ৮/১০ জন। তারা রোজিনাকে ধরতে উদ্যত হলে রিয়ন তাদের বাধা দেন। এসময় রিয়নের বামপায়ের উরুতে গুলি করে তারা। গুলির শব্দে লোকজন এগিয়ে এলে পিছু হটে যায় জেমস ও তার দলবল।
 
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে জানান, গুলিবর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। উল্টো রিয়ন ও স্থানীয়রা তাদের ওপর হামলা চালায়। রিয়নই জেমসকে উদ্দেশ্য করে গুলিবর্ষণ করেন এবং তা ভুলবশত তারই পায়ে বিদ্ধ হয়। এছাড়া রোজিনা বেগমের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।