নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৯ ডিসেম্বরের আগেই দল ও জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
নীতি-নির্ধারক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর আবারও দল ও জোটের প্রার্থীদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ৩৫ থেকে ৪০টি আসন ছাড় দেওয়া হতে পারে। আবার এই সংখ্যা ৩৫ এর নিচেও নামতে পারে। দু’একদিনের মধ্যে এগুলো চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত জাপার জন্য ২৩টি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। এসব আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। আর যেসব আসন জাপাকে ছেড়ে দেওয়া হবে সেগুলো থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীও প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
১৪ দলের অন্য শরিকদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টিকে পাঁচটি, জাসদকে দু’টি, বাংলাদেশ জাসদকে দু’টি, জাতীয় পার্টিকে (জেপি) একটি এবং তরিকত ফেডারেশনকে দু’টি আসন দেওয়া হতে পারে। জাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টির আসন কমতেও পারে। ১৪ দলের বাইরে বিকল্পধারাকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে তিনটি আসন।
সূত্র জানায়, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই এই বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে। জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করার আগেই যেসব আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই দলের একটি টিম কাজ শুরু করে দিয়েছে। দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে এই টিমে রয়েছেন আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
এ বিষয়ে গত ১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি টিম নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও পরিচালনায় সার্বক্ষণিক কাজ করবে। নেত্রী (সভাপতি শেখ হাসিনা) তাদের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।
নির্বাচন পরিচালনার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর এই নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকটি থেকে বিভিন্ন আসনে দল ও জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাদের ফোন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাদের নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে দল ও জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতেও বলা হয়।
জানা গেছে, ৮০টির মতো আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাছাইয়ে অনেকেই বাদ পড়েছেন। বর্তমানে ৭০টির মতো আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এদের মধ্যে ৫০ জনের মতো বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে মঙ্গলবার কথা বলেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি। কেউ কেউ প্রত্যাহার করছে। কাউকে কাউকে আমরা ডাকছি, কারও কারও কাছে লোক পাঠাচ্ছি। আশা করি, সব ঠিক হয়ে যাবে, কোনো সমস্যা থাকবে না।
পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব জায়গায় প্রয়োজন হবে সেসব জায়গায় আমরা লোক পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণ করাবো।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৮
এসকে/এইচএ/