বুধবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নোয়াখালীতে আমাদের এক কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, এ সহিংসতা কারা করছে। এখন ফখরুল সাহেব সহিংসতা-নাশকতা, সরকারিদলের ওপর নিপিড়িন কারা করছে।
নয়াপল্টনের হামলার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নয়াপল্টন অফিস থেকে আপনারা যা করেছেন তার নেতৃত্ব দিয়েছেন মির্জা আব্বাস। আজকে তার মেয়ে পর্যন্ত সন্ত্রাসী। এটা ভাবতে অবাক লাগে, গোটা পরিবারকে সন্ত্রাসী বানিয়েছে। নিজেও করে পরিবারকে দিয়েও সন্ত্রাস করাচ্ছে।
নির্বাচনে একই আসনে কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ যে মওদুদ আহমদ সাহেব বড় বড় কথা বলেন। তিনি গত ৫ বছরেও তার নির্বাচনী এলাকায় যাননি। এখন নির্বাচনের কারণে তিনি যাচ্ছেন। এজন্য তাকে স্বাগত জানাই। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী না হলে তো নির্বাচন জমবে না। আমি এর আগেও বলেছি, মওদুদ আহমদ সাহেবের কাগজপত্রের ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে। আমি কিন্তু বলেছি তার যদি ছোটখাটো ত্রুটি থাকে এটাকে ইগনোর করুন। এবং তার মনোনয়নপত্র বৈধ না হলে আমি কষ্ট পাবো। প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমতে হবে না হলে নির্বাচন কিসের! উনি কিন্তু জমাতে পারছেন না, বিএনপি ভাঙ্গা হাট কোথাও জমছে না। নোয়াখালী-কুমিল্লা এলাকায় বিএনপির কোনো প্রার্থী এখন পর্যন্ত মাঠে নেই। কিন্তু তারা বলছে গণজোয়ার। আমার কাছে বিষয়টি বড় হাস্যকর মনে হয়।
নির্বাচনী প্রচারণায় যাওয়ার সময় তাদের হাতে লাঠিসোটা ককটেল এগুলো থাকে উল্লেখ করে কাদের বলেন, প্রচারণার সময় তাদের হাতের লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক ব্যবহার করে। আমাদের কিছু কর্মীকে আহত করেছে। এরপরে জনগণের প্রতিরোধের মুখে তিনি (ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ) উপজেলায় একটি সভা সমাবেশ করতে পারেনি। গণজোয়ার থাকলে তিনি জনগণের প্রতিরোধ ভেঙে সভাস্থলে পৌঁছাতে পারতেন। তিনি এতো বড় মাপের নেতা যে তার সভাস্থল থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে একটি চায়ের দোকানে বসে ৭-৮ জন নিয়ে সভা করেন। নেতিবাচক জনপ্রিয়তার কারণে বিএনপির রাজনীতি দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। পল্টনে যে নারকীয় তাণ্ডব তারা শুরু করেছিল সেটা এখনো তারা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পাঁচ বালিয়া ইউনিয়নে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। হানিফ নামের যুবলীগের এক কর্মীকে প্রথমে চোখের মধ্যে মরিচের গুঁড়া দিয়েছে, এরপর ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দিয়েছে। এরপর গুলি করে তাকে স্পটে হত্যা করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিএনপি আবারো প্রমাণ করলো তারা সন্ত্রাসী দল। গতকালকে যে দু’টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে সে দু’টি হত্যাকাণ্ডে বিএনপি করেছে। এটার প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। এটা কোন সাজানো বানানো কথা নয়। এরপরও আজকে আপনারা বলছেন সারাদেশে অত্যাচার নিপীড়ন চলছে।
‘আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, প্রচারণার কাজে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করছি না’- এমন দাবি করে তিনি আরও বলেন, মওদুদ সাহেব অভিযোগ করেছেন আমি নাকি সরকারি সুযোগ সুবিধা ও প্রটোকল ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি। এখানে সাংবাদিকরা প্রত্যক্ষ করেছেন। আমার জনসভায় কমপক্ষে লোক হয়েছে ৭০ হাজার আর মওদুদ সাহেব যে এই জনসভায় যেতে পারেননি। তিনি সেখানে পথে পথে সহিংসতা চালিয়েছেন। কাজেই এখন গণভাটাকে গণজোয়ার বলছে বিএনপি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি আমি কোনো সরকারি গাড়ি ব্যবহার করিনি। আমার সঙ্গে একজন মন্ত্রী হিসেবে ও একটি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যে নিরাপত্তা প্রহরী থাকার কথা সেই হিসেবে আমার সঙ্গে কিছু পুলিশ থাকে। আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আমার গাড়ির পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং আমি আবারও চ্যালেঞ্জ করে বলছি এ গাড়ি সরকারি গাড়ি নয়। মওদুদ সাহেবের সঙ্গেও পুলিশ আছে এটা তার নিরাপত্তার জন্য। তিনি মিথ্যাচার করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
এসএইচ