প্রতীক পাওয়ার রাত থেকেই প্রার্থীরা ঝাপিয়ে পড়েছেন মাঠে। এক রাতেই রাজধানী ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টারে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নয়ন সমতাভিত্তিক বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন তিনি। মেননের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তবে আব্বাসের পোস্টার চোখে পড়েনি ওই এলাকায়।
অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য এলাকার তেমন উন্নয়ন করেনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অনেকে বলছেন দুই দলের হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচন জমবে। অন্যদিকে ঢাকা-১০ আসনে পোস্টের ছেয়ে ফেলেছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কলাবাগান ও নিউমার্কেট এলাকায় সাদা কালো পোস্টারে ছেয়ে গেছে। তিনি গত ১০ বছরে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি স্থানীয়দের। ঢাকা-১০ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আবদুল মান্নানের ধানের শীষের পোস্টার চোখে পড়েনি।
৫০ নম্বর ওয়ার্ড পুকুরপাড়ের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, এবার ভোট ভালো হবে। আওয়ামী লীগ বিএনপি মাঠে আছে। গেলো বার ভোট ছিল না, মজাও ছিল না। এবার মাঠে নোকা-ধানের শীষে লড়াই ভালো হবে।
অন্যদিকে জমে উঠেছে ঢাকা -১৭ (গুলশান, বনানী, ভাসানটেক, ক্যান্টনমেন্ট) আসনের লড়াই। মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (লাঙল প্রতীকে), তৃণমূল বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিব রহমান পার্থ।
তবে পোস্টার টাঙানোয় এগিয়ে এরশাদ। কিছু কিছু স্থানে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের পোস্টার দেখা গেছে। পোস্টারের দিক থেকে এরশাদ এগিয়ে থাকলেও নৌকা, লাঙল ও ধানের শীষের ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে আশা করছেন ভোটাররা। বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) প্রার্থী এস এম আবুল কালাম আজাদের কোনো খবর নেই। গত সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী না থাকায় ফাঁকা মাঠে গোল দেন আবুল কালাম আজাদ। টেলিভিশন প্রতীকে ৪৩ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এস এম আবুল কালাম আজাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ হান্নান মৃধা ফুটবল প্রতীকে পেয়েছিলেন চার হাজার ৪৬ ভোট।
ঢাকা-৭ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাজী মো. সেলিম। জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পুরান ঢাকার লালবাগ, চকবাজার, আহসান মঞ্জিল এলাকায় সর্বত্রই উড়ছে নৌকার পোস্টার। অনেক স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্পও তৈরি করা হয়েছে। সেলিমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু। তবে মন্টুর কোনো পোস্টার চোখে পড়েনি।
ঢাকা-৬ আসনে ধানের শীষে লড়ছেন গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী। ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, কোতয়ালী এলাকায় পোস্টার চোখে পড়েনি। তবে ঢাকা-৬ আসনে সাবেক মন্ত্রী জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদের নৌকার পোস্টার দেখা গেছে নির্বাচনী এলাকাজুড়ে।
একই চিত্র ঢাকাজুড়ে। সবখানেই আওয়ামী লীগ-মহাজোট প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানার টাঙানো। ঢাকা-১২ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কয়েকটি স্থানে তিনি নির্বাচনী ক্যাম্পও তৈরি করেছেন। তবে মাঠে নেই ধানের শীষের প্রার্থী সাইফুর আলম।
প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যেমন জনগণের কাছে এগিয়ে, দেশের মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে তেমনি ঢাকাসহ সারাদেশে প্রচারণাও এগিয়ে। কাল (১৩ বৃহস্পতিবার) শহীদ মিনার থেকে অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে প্রচারণায় নামবো। ভোটারদের কাছে যাবো।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা-১৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবদুস সালাম বলেন, কিছুটা দেরি হয়েছে নানা কারণে। তবে পোস্টারের কাজ শুরু করে দিয়েছি। দু’একদিনের মধ্যে ঢাকা শহর ছেয়ে যাবে বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
এমআইএস/এএ