এরই অংশ হিসেবে ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও জালভোট প্রতিরোধে কেন্দ্রভিত্তিক পাহারা কমিটি তৈরির কাজ শুরু করেছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে কমিটি করার দায়িত্ব দিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।
ইতোমধ্যে পাহারা কমিটিতে নাম দিতে কেন্দ্র থেকে জেলা ও উপজেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিটির কাজ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। তবে কৌশলগত কারণে এই মুহূর্তে কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হবে না। নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে কমিটির তালিকা সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
দলটির দাবি, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হওয়ায় এই কমিটি করছে তারা। লক্ষ্য হচ্ছে, নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ‘ভোট চুরি’ প্রতিরোধ করা। দলটির নেতাদের বিশ্বাস, এই কমিটি যেকোনো মূল্যে অনিয়ম প্রতিরোধ করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ভোটকেন্দ্র পাহারা কমিটিতে নারী ও সাহসী নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। প্রতি ভোটকেন্দ্রে নির্ধারিত এজেন্টের বিপরীতে তিনগুণ এজেন্ট প্রস্তুত করা হচ্ছে। দলটির লক্ষ্য ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এক এজেন্টকে বের করে দিলে বিকল্প এজেন্ট যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারে।
এছাড়া ভোটকেন্দ্রের আশপাশে দলীয় সাহসী কর্মীদের সমন্বয়ে প্রতিরোধ কমিটিও থাকবে। এছাড়া পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে যে ছক তৈরি করেছে, সেই তালিকার বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের কমিটিতে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী একাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজার ১৯৯টি। সেই তালিকা অনুযায়ী ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোটকেন্দ্র পাহারা কমিটি তৈরি করছে বিএনপি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ১৭ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিতে পারেন বলে জানা যায়। যদিও ইতোমধ্যে তারেক রহমানের নির্দেশেই সেই ভোট পাহারা কমিটির কাজ শুরু হয়েছে।
জানা যায়, এবারের নির্বাচনে ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬ হাজার ৫৪০টি। সেই অনুযায়ী প্রায় তিনগুণ বেশি এজেন্ট প্রস্তুত করছে দলটি। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সাহসী দলের জন্য নিবেদিত এমন নারীকর্মীকে বেছে বেছে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সমতল ভূমি থেকে অনেক দূরে। নির্বাচনকে তামাশা বানিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তারা আমাদের কোনো দাবিই মানেননি।
ইসিও একটা পুতুল। তাই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কায়দায় ভোট চুরির চেষ্টা করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে।
ভোটকেন্দ্র ভিত্তিক কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে আমাদের তো আর সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ নেই। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণ। জণগণকে সঙ্গে নিয়েই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভোট চুরি প্রতিরোধ করতেই জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
দশম জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি । ২ হাজার ৪৯২টি ভোটকেন্দ্র বেড়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ১৯৯টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
টিএম/এএ