একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। জীবনের শেষ নির্বাচনে তার গলায় বিজয়মাল্য পড়াতে এই নির্বাচনী যৌথ প্রতিনিধি সভার আয়োজন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
বিভেদ-কোন্দল ভুলে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের এই শক্ত বন্ধন এবং প্রতিনিধি সভার দর্শক সারিতে বিপুলসংখ্যক তারুণ্যের উপস্থিতি ভোটের মাঠে নিজের পোক্ত অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়ায় বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায় রওশনকে।
নির্বাচনী সভায় নিজেকে জেতানোর দায়িত্বটা আওয়ামী লীগের কাঁধেই যেমন ছেড়ে দিয়েছেন তেমনি তারুণ্যের আবাহনে গান শুনিয়েছেন তরুণ-যুবাদের। শপথ করিয়েছেন সুন্দর আগামী বিনির্মাণে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে নিজেদের মুক্ত করতে। রওশন গেয়েছেন ‘নতুন বাংলাদেশ গড়বো মোরা, নতুন করে আজ শপথ নিলাম..’।
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট স্কুল মাঠে নির্বাচন সমন্বয় কমিটির আয়োজিত নির্বাচনী যৌথ প্রতিনিধি সভায় এমন দারুণ মেজাজেই পাওয়া গেলো বিরোধী দলীয় নেতাকে।
সভাস্থল থেকে বেরিয়ে নিজের গাড়িতে ওঠার পর গ্লাস নামিয়ে সড়কে জীবনের প্রয়োজনে ছুটে বেড়ানো মানুষজনকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। তখনো বেশ উৎফুল্লই মনে হচ্ছিলো প্রবীণ এই রাজনীতিককে।
দলীয় সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকে ঘিরে ময়মনসিংহে আসার পর থেকেই দফায় দফায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রওশন এরশাদ। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিত হন।
বিগত ৫ বছরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক অব্যাহত রাখেন রওশন এরশাদ। গত সংসদ নির্বাচনে দেশে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে রওশনের ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারাও তার প্রতি কৃতজ্ঞ। সেই কথাটিই এদিন স্মরণ করিয়ে দেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা।
খোকা বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে আপনার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। আপনি আমাদের নেত্রীর পাশে ছিলেন। আমরা আপনাকে (রওশনকে) আমাদের আপনজন মনে করি। আপনাকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবেই কাজ করবে। ইতোমধ্যেই ময়মনসিংহ সদরের মাটিতে নৌকা-লাঙ্গল একাকার হয়ে গেছে।
ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগের রাজনীতির ‘অভিভাবক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় সদ্য সাবেক ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানকে। বর্ষিয়ান এই রাজনীতিক দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আসনটিতে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। পরে তাকে টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্মমন্ত্রী করা হয়।
রওশনের পক্ষে ভোট চেয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে, মহাজোটের স্বার্থে সম্মিলিতভাবে লাঙলে ভোট দেবেন। কেউ কোনো দ্বিধা-বিভক্তি করতে পারবেন না। লাঙল-নৌকা একত্র হয়েই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবো।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভোটের চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপরই নিজের শতভাগ নির্ভরতা ও বিশ্বস্ততার কথা জানালেন রওশন। তিনি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) সবাই আমার হয়ে কাজ করবেন। সাহায্য-সহযোগিতা করবেন। ভোটে কিভাবে আমাকে জিতিয়ে আনবেন সেটা আপনাদের দায়িত্ব।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
এমএএএম/এমজেএফ