তবে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে। প্রচার-প্রচারণার জন্য প্রার্থীদের হাতে মাত্র ১২ দিন সময় থাকলেও এই আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা-এরশাদ) প্রার্থীর দেখা মেলেনি এখনো।
স্থানীয় জাপার নেতাদের মতে, বিগত সময়ের নির্বাচনে বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি নয়, জাপা ও বিএনপির মধ্যে হয়েছে ভোটের লড়াই।
জাতীয় পার্টির উজিরপুর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহিদ আলম বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মাসুদ পারভেজ (নায়ক সোহেল রানার সঙ্গে স্থানীয় কর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণার কাজ শুরু না হলেও নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি কমিটির খসড়া করা হয়েছে। প্রার্থী নির্বাচনী এলাকায় আসলেই প্রচারণার কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে।
বরিশাল-২ আসনে ইউনিয়ন পর্যায়ে জাপার কমিটি ও নেতাকর্মী রয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশে আসার পর তার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বরিশাল-২ আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. মাসুদ পারভেজ বাংলানিউজকে বলেন, দৌড়ের মধ্যে আমাকে হোঁচট খেতে হয়েছে, সে কারণে আমি যখন পরে গেলাম, আর তখন সেখান থেকে ওঠার মুহুর্তে দেখি নিজের পার্টির মধ্যেই হুলস্থুল। এখন কি করবো সে ধরনের ডাইরেক্ট কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে নেই।
তিনি বলেন, হাইকমান্ড থেকে কিছু নির্দিষ্ট করে বলা হচ্ছে না এবং এখন ভোটের যে সময়টা রয়েছে তাতে নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে কতোটা গোছানো সম্ভব হবে তা বুঝতেই পারছেন। আমি এখন কিছুটা বিব্রত, কিছুটা হতবম্ভ। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলবো, বিজয়ের মাসে নির্বাচন হচ্ছে, তাই বিজয়ের পতাকা মুক্তিযোদ্ধার হাতে থাকলেই সুন্দর লাগতো।
এদিকে জাতীয় পার্টি প্রচারণার মাঠে না থাকলেও বরিশাল-২ আসনের আওয়ামী লীগ অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ দলীয় নেতা, কর্মী সমর্থক সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইছেন। আবার বিভক্তি থাকলেও শেষ সময় এসে জনসভা-পথসভা কিংবা গণসংযোগের মাধ্যমে নিজেদের শক্ত অবস্থানের জানান দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি। তারা ক্ষমতাসীনদের দোষ-ত্রুটি সামনে তুলে ধরে বিগত সময়কার উন্নয়নের কথা তুলে ধরে ভোট চাইছে।
বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সালেহ্ মঞ্জু মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, দল এবং নৌকার প্রতীকের স্বার্থে কারো কোনো ক্ষোভ অভিমান নেই। সব নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার প্রতীকের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আশা রাখি আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার জয় হবে। আর একই কথা বললেন উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ সিকদার বাচ্চুও।
এদিকে উপজেলা বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও গত বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) নিজ এলাকায় এসেই পুরোদমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে শুরু করেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ। যদিও প্রচারণার মাঠে নেমেই নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ছাড়া এ আসনে আরও চারজন প্রার্থী রয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রচারণায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, এ আসনে মোট তিন লাখ এক হাজার ৩৯৭ জন ভোটার রয়েছে, যার মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৪৮ হাজার ৮৯ জন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/