সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গৌরনদী উপজেলার সরিকলের নিজ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
১০ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে স্বপন বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, খালেদা জিয়ার নির্দেশে আমি রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর থেকে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারিছুর রহমান আমার প্রতিপক্ষ দলের কতিপয় নেতাকর্মীদের নিয়ে লাগাতারভাবে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে গত ১২ ডিসেম্বর আমি নিজ বাড়িতে এসে প্রচার কাজ শুরু করেছি। আমার কর্মসূচিতে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছিলেন তাদের ওপর সন্ত্রাসীরা নিপীড়ন, নির্যাতন চালাচ্ছেন। এদের নির্যাতন থেকে নারী-শিশুও রেহাই পাচ্ছেন না। নিজ বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমার নির্বাচনী এলাকার ২৯ জন নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালিয়ে জখম করেছে। ২৬ জন নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, তছনছ ও এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ১০ জন নেতাকর্মীর দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি হতে দিচ্ছে না।
লিখিত বক্তব্যে স্বপন আরও অভিযোগ করেন, আমার কর্মীদের পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না, তাদের মারধর করে পোস্টার ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে গেলে কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। ধানের শীষের মিছিলে মোটরসাইকেল উঠিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান ও নৌকার কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধ্য করছে। নির্বাচনে প্রচারে বাধা ও প্রতিনিয়ত হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দূরের কথা, সাধারণ ডায়েরি পর্যন্তু নিচ্ছে না।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনই সরকার পরির্বতনের একমাত্র মাধ্যম পথ। বর্তমান সরকার দেশে ভোটারবিহীন নির্বাচনের সংস্কৃতি চালু করেছে। আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে অফিশিয়ালি চিঠি দিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আজ অবদি নির্বাচন কমিশনারের আদেশ কার্যকর হয়নি।
স্বপন নির্বাচন কমিশন ও প্রধান কমিশনারের প্রতি আহ্বান জানান, যতোটুটু সময় আছে, নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন, ইতিহাসে নাম লেখা থাকবে। অন্যথায় উদ্ধুত পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারবেন না।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের জন্য লেভেল ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রস্তুত বলে যে দাবি করেছেন, তা সম্পূর্ণই অসত্য। তিনি দেশের গণমাধ্যমকে বিশ্বাস করেন না বলেই এ মন্তব্য করেছেন। কারণ গণমাধ্যমে প্রতিফলিত চিত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। এসময় তিনি বরিশাল-১ আসনের নির্বাচনী লেভেল ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ দেখার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) আমন্ত্রণ জানান।
স্বপন বলেন, বাস্তবচিত্র দেখার জন্য আমি তাকে (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) আমার নির্বাচনী এলাকা ও আমার বাড়িতে অবস্থান করার জন্য বিনীতভাবে আমন্ত্রণ করছি। বাস্তবচিত্র দেখার জন্য ইসি আমার বাড়িতে একরাত অবস্থান করলেই ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ কতোটা লেভেল তা বুঝতে পারতেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গৌরনদীতে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮
এমএস/আরবি/