ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশে উন্নীত করবে বিএনপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশে উন্নীত করবে বিএনপি

হোটেল লেকশোর (গুলশান) থেকে: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ১১ শতাংশে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে রফতানি প্রবৃদ্ধির হার তিনগুণ বাড়ানো হবে।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ইশতেহার ঘোষণার সময় একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, শেয়ার বাজার, ব্যাংক ও সামাজিক নিরাপত্তা তহবিলের অর্থলুটের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যতে যাতে কেউ দুর্নীতি অনাচার করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে সিকিউরিটি অ্যান্ড কমিশন ও রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডে সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হবে।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো পরিচালনা ও তদারকির ভার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যাস্ত করা হবে। বর্তমানে চলমান কোন উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে মেগাপ্রকল্পে ব্যয়ের আড়ালে সংগঠিত দুর্নীতি নিরীক্ষা করে দেখা হবে এবং এজন্য দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। বর্তমান সরকারের শেষ দুই বছরে তড়িঘড়ি করে নেওয়া প্রকল্পগুলো পুনঃবিবেচনা করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। দেশে কর্মরত সব বিদেশি নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিটের আওতায় এনে মুদ্রাপাচাররোধ করা হবে এবং তাদেরকে করের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও একটি টাস্কফোর্স রেন্টাল পাওয়ার প্রজেক্টের উচ্চ ব্যয়ের কারণও তদন্ত করে দেখবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।  

ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে জানিয়ে ইশতেহারে ফখরুল বলেন, আমরা সরকার গঠন করতে পারলে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি পৃথক শিক্ষা চ্যানেল চালু করা হবে। স্বল্প আয়ের পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বল্প সুদে শিক্ষা ঋণ চালু করা হবে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, শিক্ষার ওপর থেকে সব ধরনের ভ্যাট বাতিল করা হবে। ভ্যাটবিরোধী, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সব মামলা প্রত্যাহার এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত বেকারদের ভাতা দেওয়া হবে।

ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ফখরুল/ছবি: ডি এইচ বাদলক্ষমতায় গেলে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করা হবে জানিয়ে ফখরুল বলেন, উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার যুক্তিসঙ্গত মুনাফা নিশ্চিত করা হবে।

‘চিকিৎসার সিংহভাগ অর্থ খরচ হয় ডায়াগনস্টিক পরীক্ষায়। তাই খরচ ও জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য সরকারি অর্থে প্রয়োজনীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার বুথ স্থাপন করা হবে। শিশুদের ডায়াবেটিস ও বেড়ে ওঠার সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে’।

ফখরুল বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে মেধাবী, জবাবদিহিমূলক যুগপযোগী ও গণমুখী জনপ্রশাসন গড়ে তোলা হবে। সব সামরিক ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব চার্টার অনুযায়ী পরিচালিত হবে। অবসরে গেলেও পুলিশ বাহিনীর রেশনিং ব্যবস্থা চালু থাকবে। তাদের ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। পাশাপাশি জাতিসংঘ বাহিনীতে পুলিশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা হবে।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যার সমাধান করা হবে। ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টরদের বেতন ৬ মাসের মধ্যে আপগ্রেড করা হবে। র‌্যাবের বর্তমান কাঠামো পরিবর্তন করে অতিরিক্ত আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠন করা হবে। এ বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ দেওয়া হবে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণসহ ১৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করবে দলটি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮
টিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।