ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ঊনসত্তরই একাত্তরের ভিত্তি নির্মাণ করেছিলো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯
ঊনসত্তরই একাত্তরের ভিত্তি নির্মাণ করেছিলো ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের আলোচনা সভা

ঢাকা: ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানই একাত্তরের ভিত্তি নির্মাণ করেছিলো বলে মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ঊন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করে আইয়ুব খান টিকতে পারেনি। বর্তমান সরকারও উন্নয়নের নামে মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষকে চূড়ান্ত অপমান করছে।

তিনি বলেন, শুধু উন্নয়নের দোহাই দিয়ে জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় বেশিদিন টিকে থাকা যায় না। ’৬৯ এর ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণ নিজের জীবন ও আত্মমর্যাদার জন্য রাজপথে নামবে।

শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ‘ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তির লড়াই ও আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অর্থনীতিবিদ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এবং দি ডেইলি নিউ এজ এর সম্পাদক নুরুল কবির ও শহীদ আসাদের বড়ভাই ইঞ্জিনিয়ার রশিদুজ্জামান।  

আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য উত্থাপন করেন গণসংতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ।

তিনি বলেন, জোচ্চুরির নির্বাচন আয়োজন করার কারণে ’৬৯ সালে আইয়ুর খানের নির্বাচন কমিশনারকে ছাত্ররা কান মলে দিয়েছিলেন। সেসময় কৃষকদের সাধারণ দাবি ছল ফসলের ন্যায্য দাম ও ভূমি সংস্কার। বর্তমানে শুধু ফসলের ন্যায্য দামের দাবিটাই তোলা হয়।
গণসংহতি আন্দোলনের আলোচনা সভায় আগতরাআলোচনায় নুরুল কবির বলেন, ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষকে ইতিবাচক অতীতে ফিরতে হয়। ইতিবাচক রূপান্তরে যাওয়ার জন্য সংগ্রামের ঐতিহ্যে বারবার ফিরে তাকাতে হয়। সাময়িকভাবে স্বৈরতন্ত্রকে মেনে নিলেও মানুষ সবসময়ই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন করে সে ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করেছে।

ইঞ্জিনিয়ার রশিদুজ্জামান বলেন, আমার কাছে এখনও অনেক না বলা কথা আছে। যা বললে অনেকেই উপকৃত হবেন। ৬৯ যারা দেখেছে, ম্যাচ বাতি দিয়ে কেমন করে আগুন জ্বলে! ’৬৯ এটম বোমার থেকেও মারাত্মক! মানুষ যখন বঞ্চনা নিপীড়নের ভেতর থাকে তখন ’৬৯ হয়। গণচেতনা আস্তে আস্তে আন্দোলনে রূপ নেয়।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের অনেকেই ’৬৯ সালে মার খেয়েছেন, জেল খেটেছেন। আজকে তারা ’৬৯ কে আগের মতো করে দেখেন না। তাদের জবানে ইতিহাসের ব্যাখ্যাকেই একমাত্র ব্যাখ্যা হিসেবে মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন। ষাটের দশক শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় সারা পৃথিবীর জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দশক। ষাট, নব্বই, এবং সাম্প্রতিক দশক এই তিনটি উন্নয়ন দশকই স্বৈরাচারের হাত ধরে। এর মধ্যে দুটি সামরিক শাসকদের হাত ধরে এবং একটি নির্বাচনের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী শাসকের হাত ধরে। আসাদ কৃষকদের নিয়ে কাজ করতেন। আসাদ-মতিউর সচেতনভাবেই মিছিলে গিয়ে মহীদ হয়। তারা এমনি এমনি মারা যাননি।

অধ্যাপক আহমেদ কামাল বলেন, সামরিক স্বৈরতন্ত্রের নিপীড়ন থেকে আমরা প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রের নিপীড়নের ভেতরে হাঁসফাঁস করছি। এর থেকে আমাদের বের হতেই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।