ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

‘বাহুবলে নয়, আইনে বন্ধ হবে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি’

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১০
‘বাহুবলে নয়, আইনে বন্ধ হবে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি’

ঢাকা: আদালতের রায়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের পর জামায়াতের ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি বন্ধ হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহল। তাই বাহুবলে নয়, আইনি ধারায় ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ হয়ে যাক বলেই চাইছেন সংশ্লিষ্ট সব মহল।



সম্প্রতি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির পক্ষ থেকে বেশ কয়েক জন রাজনীতিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৌশলগত কারণে বাহুবলে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে এখন আর জোরালো ভূমিকা কেউই নিতে চাইছেন না। তারা মনে করছেন, জোর করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে গেলে ‘সশস্ত্র ক্যাডার প্রধান’ রাজনৈতিক দল জামায়াতের নেতাকর্মীরা ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে’ চলে যাবেন। আর তাহলে রাজনৈতিক অস্থিরতা যেমন বাড়বে, তেমনি রাষ্ট্র ও সমাজজীবনে তৈরি হবে অস্থিতিশীলতা, বেড়ে যাবে নাশকতার সম্ভাবনা।

তাই ক্ষমতাসীনরা এখন আইনি বাধ্যবাধকতায় জামায়াতের কর্মকা- নিষিদ্ধ করার পক্ষে। একই সঙ্গে জামায়াতবিরোধী গণসচেতনতা তৈরিও জরুরি বলে মনে করেন তারা।

তাই জামায়াত নিষিদ্ধ করার অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে এসেছে সরকার ও প্রগতিশীল পক্ষ।

সম্প্রতি সরকার দলীয় প্রভাবশালী এক নেতা জামায়াত নিষিদ্ধ হচ্ছে বলে বক্তব্য দেওয়ার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকে নিয়ে কথা কম বলার নির্দেশ দেন।   কোনো দলই নিষিদ্ধ হবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতি ম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘জামায়াতকে রাজনীতি করতে কেউ নিষেধ করেনি। তবে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় অনুযায়ী তারা ধর্মীয় রাজনীতি করতে পারবে না। রাজনীতি করতে হলে দেশের আইন-নীতি মেনেই করতে হবে। ’

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধে বাহুবলের প্রয়োগ দরকার নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ম-লীর অপর সদস্য ওবায়দুল কাদের এমপি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘জামায়াতকে সরকার বন্ধ করবে কেনো? তাদের কর্মকান্ডের কারণে জনগণই তাদের প্রত্যাখান করবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘যা হবে তা সময়, সুযোগ ও বাস্তবতার নিরিখেই হবে। সরকার জোর করে বন্ধ করতে গেলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে। এতে দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে। আর এ সুযোগ নেবে সুযোগ সন্ধানীরা। ’

‘তবে  এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না’, বলেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বক্তব্য দিয়েছেন। আমি ঐ বক্তব্যর সঙ্গে একমত। ’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহমুদ হাসান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা ঠিক হবে না। পৃথিবীর অনেক দেশেই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আছে। তবে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকা-কে আমি পছন্দ করি না। ’

এদিকে বেশ ক’জন মন্ত্রী ও সরকার দলীয় শীর্ষ নেতার মুখে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ হচ্ছে বলে আওয়াজ শোনা যাওয়ার পর ধর্মাশ্রয়ী দলগুলোর মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। রাজনীতিতে টিকে থাকতে এখন বিকল্প কৌশল খুঁজছে তারা। ‘নিষিদ্ধ হবে না’- এমন কোনো কথাবার্তায় এখন আর তাদের ভরসা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।