খোঁজ নিয়ে ও জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দু’টি জোটই এখন অকার্যকর। এর মধ্যে ২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম নতুন একটি মঞ্চ বানিয়েছেন।
তাদের এ মঞ্চ গঠনকে বিএনপি মহাসচিব প্রকাশ্যে স্বাগত জানালেও অপ্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়াকে ‘মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন, বিএনপি নিজেরা যেখানে জোট ও দলগতভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করছে, সেখানে আবার কর্নেল অলির আলাদা প্ল্যাটফর্ম গঠন করে তার মুক্তি চাওয়ার কী প্রয়োজন! যদিও মির্জা ফখরুল প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে বলেছেন, দাবি তো একই। সুতরাং কে কোন মঞ্চ থেকে দাবি করছে সেটা বিষয় না।
বিষয়টি নিয়ে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে কথা বলা হয় ২০ দলের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করা এলডিপি প্রধান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০ দলের কোনো কার্যক্রম গত এক বছরে হয়নি। এজন্য জোটের বড় দল হিসেবে বিএনপিকেই দায় নিতে হবে। আমি মুক্তিমঞ্চ করেছি। এতে ২০ দলীয় জোটের কোনো ক্ষতি হবে বলে মনে করি না।
কর্নেল অলি আহমদের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বাংলানিউজকে বলেন, ২০ দলীয় জোট কাগজে কলমে আছে, বাস্তবে নেই। সেটা আমি মনে করি না। বরং আমি মনে করি সব দল নিজেদের ঘর গোছানোতে ব্যস্ত আছে। বড় দল হিসেবে বিএনপি শনিবারও আমাকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দাওয়াত কার্ড দিয়েছে। সুতরাং সময় মতো ২০ দলীয় জোট একসঙ্গে আবারও মাঠে নামবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ফ্রন্টের অন্যতম শরিক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলানিউজকে বলেন, জোট এখনও আছে। তবে জোটের কোনো কার্যক্রম নেই সেটা ঠিক।
তাহলে জোট অকার্যকর কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মান্না বলেন, না জোট অকার্যকর নয়। এটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা আছে। কিন্তু সামনে তো জগদ্দল পাথর বসে আছে। এটা কীভাবে পার হওয়া যায় সেটাই বড় বিষয়। সেজন্য আন্দোলন করতে হবে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্যর নেতাদের দাওয়াত দিলেও বিএনপিকে দেওয়া হলো না কেন জানতে চাইলে মান্না বলেন, ওটাতো শোক দিবসের আলোচনা, সেজন্য হয়তো তাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, ২০ দল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, কর্নেল অলি আহমদের নবগঠিত জাতীয় মুক্তিমঞ্চ কোনোটাই অকার্যকর নয়। সবাই সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান থেকে কথা বলছেন। সবাই নতুন নির্বাচন চায়।
তিনি বলেন, ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। দেশে এখন পুলিশি শাসন চলছে। বিরোধী জোটের নেতাকর্মীরা মামলা-হামলা-নির্যাতন, দুদকের মামলা, খুন-গুমের বেড়াজালে আটকা পড়েছে। এ অবস্থায় সব জোট এক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
এমএইচ/এইচএডি/টিএ