বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর গুলশান-২ এ তার বাসায় অভিযান চালিয়ে খালেদকে আটক করা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত পৌনে ন’টার দিকে খালেদ ভূঁইয়াকে বাসা থেকে র্যাব সদর দপ্তরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব সদর দপ্তরের এক বার্তায় জানানো হয়, অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনোর মালিক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসা থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটির লাইসেন্স রয়েছে। আরেকটির লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ।
এর আগে গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। একই সঙ্গে অভিযান চালানো হয় রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ং মেন্স ক্লাবে তার মালিকানাধীন ক্যাসিনোতেও।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অভিযান শুরু হওয়া ওই অভিযানে নেতৃত্বে দেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম ও র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান।
পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি সাংবাদিকদের জানান, অভিযানে ওই ক্যাসিনো থেকে নারীসহ ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
সারওয়ার আলম বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, এই ক্লাবে গত আট মাস ধরে অবৈধ আসর বসছিলো। এ সময় আমরা দেখি- ক্লাবের নিচতলায় যন্ত্রের মাধ্যমে জুয়া খেলা (ক্যাসিনো) চলছে। এছাড়া জুয়া খেলার ফাঁকে ফাঁকে মদ পান হচ্ছে।
তিনি জানান, যারা এই ক্লাবে এসেছেন তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আটক ব্যক্তিদের মদ পানেরলাইসেন্স নেই। এমনকি ইয়াং মেন্স ক্লাবেরও মদ বিক্রির লাইসেন্স নেই।
পড়ুন>>যুবলীগ নেতার ক্যাসিনোতে র্যাবের অভিযান, আটক ১৪২
গুলশানের ওই বাড়ির ম্যানেজার আরিফ হোসেন বলেন, বিকেল তিনটার দিকে সাদা পোশাকে একদল দল আসে। তারা পরিচয় দেয় গোয়েন্দা বলে। পরে আরও পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা এসে বাসা ঘিরে ফেলেন। পরে বাসায় অভিযান চালানো হয়। বাসায় শাশুড়ি, স্ত্রীসহ দুই সন্তান নিয়ে গত চারবছর ধরে থাকছেন খালেদ ভূঁইয়া। এটি তার নিজের ফ্ল্যাট।
এদিকে ইয়ং মেন্স ক্লাবে অভিযান চালানোর পর ক্যাসিনোর মালিক খালেদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র এসব অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় লোকজন জানান, খালেদ ভূঁইয়া বেড়ে উঠেছেন শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে। তিনি রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াং মেন্স ক্লাবটি তিনি সরাসরি পরিচালনা করেন। এসব ক্লাবে প্রতিদিন ১০টা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত চলে জুয়ার আসর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, খিলগাঁও-শাহজাহানপুর হয়ে চলাচলকারী লেগুনা ও গণপরিবহন থেকেও নিয়মিত টাকা দিতে হয় খালেদকে। প্রতি কোরবানির ঈদে শাহজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
খিলগাঁও রেল ক্রসিংয়ে প্রতিদিন রাতে মাছের একটি হাট বসান এ নেতা। একইভাবে খিলগাঁও কাঁচাবাজার সভাপতির পদটিও দীর্ঘদিন ধরে তিনি ধরে রেখেছেন। শাহজাহানপুরে রেলওয়ের জমি দখল করে দোকান ও ক্লাব নির্মাণ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯/আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা
এজেডএস/পিএম/এমএ/