শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) শামীমকে গুলশানের নিকেতনের কার্যালয় থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা, অস্ত্র-মাদকসহ আটক করা হয়। এরপরই আলোচনায় উঠে আসে তার রাজনৈতিক পরিচয়।
আরও পড়ুন> শামীমের ডেরায় মিললো ২ কোটি টাকা, ১৬৫ কোটির এফডিআর চেক
যদিও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, জি কে শামীম তাদের কেউ না। তবে, জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় শামীমের নাম কমিটিতে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ নিয়ে ওই সভায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে চরম বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ফলে, সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে দিয়েই শেষ হয় ওইদিনের বর্ধিত সভা।
২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর আবদুল হাইকে সভাপতি, সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি ও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এ কমিটি গঠনের ১৩ মাস পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে, পূর্ণাঙ্গ এই কমিটিতে সব মিলিয়ে আটটি পদ খালি ছিল, যা নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগে কয়েক দফা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের খালি পদগুলো পূরণের লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার অন্য আলোচ্য বিষয়গুলো ভালোভাবে সম্পন্ন হলেও যখনই আটটি পদ পূরণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়, তখনই শুরু হয় তুমুল হট্টগোল ও হৈ চৈ। সভায় উপস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে জেলা আওয়ামী লীগের শূন্য পদগুলো পূরণের বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা অফিসের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে একান্তভাবে ঘন্টাখানেক বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে আটটি পদ পূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এতে সদস্য হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান দিপুর নাম সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সে সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পক্ষে কাদির, জি কে শামীম ও শরফুদ্দিনসহ আরও দুই জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি হিসেবে জসিম উদ্দিন ও জিয়াউল হক কাজলের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল।
এদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার প্রস্তাবিত জি কে শামীমের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান, সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূইয়াসহ অনেকেই ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, সহ-সভাপতি হিসেবে জি কে শামীমের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। তাকে আমরা কেউ চিনি না। এ নিয়ে তখন তর্ক হয়েছিল। মূলত, সেক্রেটারী আবু হাসনাত শহীদ বাদল সাহেব নিজেই জি কে শামীমের নাম প্রস্তাব করেছিলেন।
আরও পড়ুন> রাস্তা খালি করতে দুই মোটরসাইকেল এসকর্ট রেখেছিলেন শামীম
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বাংলানিউজকে বলেন, জি কে শামীম আওয়ামী লীগের কমিটির কেউ নন। আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোথাও তার নাম নেই।
এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এম এ রাসেলের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর বিতর্কিত ব্যবসায়ী জি কে শামীমকে আটক করেছে র্যাব। এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। এই অসত্য সংবাদ পরিবেশন করা থেকে সবাইকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, জি কে শামীম নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে কোনো পদে নেই।
আরও পড়ুন> জি কে শামীম আমার লোক হলে যুবলীগে গেল কীভাবে: আব্বাস
বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
একে