ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতার অসদাচরণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতার অসদাচরণ ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ খান মেনন।

যশোর: যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের শাখা ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ খান মেননের তদবিরে ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে না দেওয়ায় শিক্ষকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও অসদাচরণের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর এমএম কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বাংলানিউজকে বলেন, এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্র রাশেদ খান মেনন প্রায় ছয় মাস আগে কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে দিতে সুপারিশ করেছিলেন।

তবে মাস ছয় পরে সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন সেই শিক্ষার্থীকে সি গ্রেড দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দলবল নিয়ে দুপুরে কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে আসেন ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ। এ সময় সেখানে মাস্টার্স পার্ট-১ ব্যবহারিক পরীক্ষা চলছিল। কয়েকশ’ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে বিভাগের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে রাশেদ অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এ সময় তিনি কৈফিয়ত চান কেন সুপারিশ করার পর ওই শিক্ষার্থীকে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। তার দলবলের আচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে রাশেদ শিক্ষকদের টেবিল চাপড়ে গালিগালাজসহ অসদাচরণ করেন। এ ঘটনার পর কলেজের অধ্যক্ষ আবু তালেব মিয়া ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।  

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বাংলানিউজকে জানান, ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ এ কলেজের সাবেক ছাত্র। তিনি বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সুপারিশ করেছিল। কিন্তু একজনের বিষয়েও সুপারিশ রাখা সম্ভব হয়নি। এতে রাশেদ ক্ষিপ্ত হয়ে দলবল নিয়ে বিভাগে এসে গালিগালাজ ও অসদাচরণ করেন। তখন মাস্টার্স পার্ট-১ ব্যবহারিক পরীক্ষা চলছিল। বাহিরের শিক্ষকের উপস্থিতিতে এভাবে গালিগালাজের ঘটনায় আমরা খুবই লজ্জিত।

জানতে চাইলে এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তালেব মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর কম পাওয়া এক দল যুবক ভূগোল বিভাগে গিয়েছিল। পরে খবর পেয়ে আমি থেকে তাদের বের করে দিয়েছি। শিক্ষকরা আমাকে জানিয়েছেন ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর হেরফের হওয়ায় কয়েকজন যুবক এসেছিল। কিছু তেমন হয়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তালেব মিয়া বলেন, শিক্ষকদের গালিগালাজ ও ভাঙচুরের ঘটনা জানি না। তবে বাকবিতণ্ডা হয়েছে।
 
অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারি এমএম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, প্রিন্সিপ্যাল স্যার তো সেখানে ছিলেন। তার সামনে কথা হয়েছে। তেমন কিছু হয়নি। আপনি এসে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন।  

এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান বলেন, ছাত্রলীগের কর্মী নয়, রিলেটিভ এক ছোট ভাইয়ের জন্য সুপারিশ করেছিলাম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
ইউজি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।