ঢাকা: নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনার আয়োজন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে কোন্দলের কারণেই দূতাবাসকে এ অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ওই অধিবেশনে তার ভাষণ দেওয়ার কথা ।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার অধ্যাদেশ জারির পর নিউইয়র্কে এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সফর। একারণেই প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে চান যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাঙালিরা। তবে সেখানকার আ.লীগ নেতাদের চরম কোন্দলের কারণেই সংবর্ধনার দায়িত্ব গিয়ে পড়ছে দূতাবাসের ওপর।
সূত্র জানায়, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে তার সামনে তিনটি কঠিন মিশন। এগুলো হচ্ছে- আওয়ামী লীগের কোন্দল মেটানো, নতুন কমিটি গঠন, জামায়াতের সরকারবিরোধী অপ্রচারের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান তুলে ধরা।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা না নিলেও সেখানকার দুই গ্রুপের নেতাদের সঙ্গে দলীয় বৈঠক করবেন। এ বৈঠকে সবার অভিমতের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিও ঘোষণা করবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতের সরকারবিরোধী প্রচারণারও উপযুক্ত জবাব দিতে প্রধানমন্ত্রী সেখানকার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এরই মধ্যে নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি অনেকটা এগিয়েছে বলে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা উপলক্ষে নিউইয়র্কে প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। তবে এ আয়োজনের কোনো পর্যায়েই সংশ্লিষ্টতা থাকছে না যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের। পরস্পরবিরোধী দুই গ্রুপ পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেওয়ায় শেষমেষ ঝামেলা এড়াতেই ওয়াশিংটন দূতাবাস ও নিউইয়র্ক কনস্যুলেটর অফিসকেই হতে হয়েছে সংবর্ধনার আয়োজক। ’
প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল মোমেন বাংলানিউটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে ভাষণের আগে আর কোনো কর্মসূচিতে দূতাবাসের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে গণসংবর্ধনার আয়োজক দূতাবাসই। ’
সম্প্রতি জামায়াত সমর্থিত একটি গ্রুপ জাতিসংঘের সামনে সমাবেশ ও বিভিন্ন স্থানে সেমিনার করে সরকারবিরোধী যে প্রচারণা চালিয়েছে তার উপযুক্ত জবাব হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর গণসংবর্ধনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ওয়াশিংটন দূতাবাস। আওয়ামী লীগ সমর্থক বাংলাদেশি আমেরিকানরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
অপর এক সূত্র জানায়, নিউইয়র্কে শেখ হাসিনার সংবর্ধনা প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ থেকে সেখানকার দূতাবাসকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সংবর্ধনা আয়োজন ছাড়াও আমেরিকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রবাসী বাঙলাদেশি পেশাজীবীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময় সভার আয়োজনেরও তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টমহল।
তারা মনে করেন, সংবর্ধনামঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর পাশে কলহ-কোন্দলে লিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবর্তে প্রবাসী পেশাজীবীদের আসন দিলে অনুষ্ঠানের মর্যাদা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি পেশাজীবীরাও অনুপ্রাণিত হবেন।
তবে এটা অনেকটা নিশ্চিত যে এবার একজন ডক্টরেট ডিগ্রিধারীই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত হচ্ছেন।
শহীদুল ইসলাম জানান, সভাপতির দায়িত্ব নিতে যে কয়জন তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন তারা সকলেই ডক্টরেট ডিগ্রিধারী। আশা করা হচ্ছে,তাদের মধ্য থেকেই একজন এ পদে মনোনীত হবেন।
তবে এই ডক্টরেট ডিগ্রিধারী ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি নাকি নিউইয়র্ক নাকি নিউইয়র্কের প্রতিবেশী রাজ্য নিউজার্সি থেকে আসছেন তা এখনো আলোচনার পর্যায়েই রয়ে গেছে।
সভাপতি পদে নাম শোনা যাচ্ছে ভার্জিনিয়ার ড. শাহজাহান মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. নুরুন্নবী, ড. মনসুর ও ড. নবীর।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে শোনা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সীতাংশু গুহ, বর্তমান সম্পাদক সাজ্জাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম চৌধুরীর নাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১০