শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সে দেশের সঙ্গে করা চুক্তির বিষয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, চুক্তির পুরো বিষয়টা আমাদের জানা নেই।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) আপনি বলেছেন যে শিগগিরই দেশে আর একটা নির্বাচন হবে, এ কথা কীসের ভিত্তিতে বললেন এমন প্রশ্নের জবাবে রেজা কিবরিয়া বলেন, একজাক্টলি ওভাবে আমি বলিনি। এ সরকারের প্রত্যেক খাতে যে ব্যর্থতা তাতে মোটামুটিভাবে রাষ্ট্র কলাপসের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাত, বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দিতে তারা হিমশিম খায়। তারা শুধু মানুষের কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রয় করছে। ব্যাংকের অবস্থাতো সবাই জানেন। তারা প্রত্যেক ক্ষেত্রে যে ফেল করছে, সেটা দেশের মানুষ আগে টের পায়নি। এখন তারা বুঝে গেছে এরা অদক্ষ এবং ব্যর্থ। আমার ধারণা হয়তো কোনো আন্দোলনের জন্য না, তাদের ব্যর্থতার জন্য তারাই ক্ষমতা ছেড়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে মানুষকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করবে। আমার এখনও ধারণা সেটা খুব তাড়াতাড়ি হবে। কিন্তু যেভাবে বলা হয়েছে ঠিক সেভাবে আমি বলিনি। তবে আমার ধারণা এটা হতেই হবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে একটা শক্তিমান সরকার যে সরকারের জনসমর্থন আছে সেই সরকার বাংলাদেশে একদিন হবে। তাতে বেশি দেরি হবে না।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর বর্তমান অবস্থা কি? নির্বাচনের আগে যেভাবে ঐক্যফ্রন্ট এক হয়েছিল ভবিষ্যতেও সেরকম ঐক্যবদ্ধ কোনো আন্দোলন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক আর একজন ছিলেন। তিনি তার মত কাজ করেছেন। আমি আমার মত করছি। ঠিক আগের মত তো হবে না। আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। এখনও বলতে পারবো না। তবে এখন পর্যন্ত আমরা সবাই একই পথে আছি। এ ব্যর্থ সরকারকে সরানোর ব্যাপারে আমাদের কারও দ্বিমত নেই।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ৩০ ডিসেম্বরের সমাবেশের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেটা অনেক বড় আকারে হবে। তবে তার আগে অনেক কিছু ঘটতে পারে। হয়তো এ সরকার ক্ষমতায় থাকবে না। আমরা যা প্ল্যান করি আর আল্লাহ কি চান সেটা দেখাতে পারবো না। সুতরাং সেটার অনেক সময় আছে। সেটা নিয়ে এখন কিছু ভাবছি না।
দলের বৈঠকে সবচেয়ে বেশি কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে দলের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সায়িদ বলেন, গণফোরামের সাংগঠনিক বিষয়ে মূলত আলোচনা হয়েছে। আমরা দেশব্যাপী সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। বলতে পারেন আমরা সাংগঠনিক কাজ করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছি।
এসময় রেজা কিবরিয়া বলেন, দুর্নীতি দমনের অভিযান নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণীর কয়েকজন নেতা ধরলেই আমরা উৎফুল্ল হয়ে যাবো এটা যেন সরকার না ভাবে। তারা প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় স্তরের নেতাদের যখন ধরতে শুরু করবে, যারা ব্যাংক-শেয়ার বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে, যারা বিলিয়নস অব ডলার বিদেশে পাচার করে নিয়ে গেছে তাদের বিরুদ্ধে যখন অ্যাকশন নেবে তখন আমরা স্বাগত জানাবো।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠক হয়। বৈঠকে নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আ ম সা আমিন, অ্যাডভোকেট মোহসিন রশীদ, মোকাব্বির খান এমপি, জগলুল হায়দার আফ্রিক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও মেজর (অব.) আমিন আফসারি উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
এমএইচ/আরবি/