রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হন তিনি। এ সময় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন আশরাফ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) খুলনা প্রেসক্লাবে জনৈক ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে অর্ধশত বাড়ি ও জমি দখলের অভিযোগ করেন। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
‘ছাত্রজীবন থেকেই চায়নিজ রেস্টুরেন্ট খুলে প্রথমে ব্যবসা শুরু করি, তারপরে মেসার্স সাকিব কন্সট্রাকশন নামে সততার সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঠিকাদারি ব্যবসা করে আসছি। পার্টনারশিপের মাধ্যমে ঠিকাদারি ব্যবসা চালু আছে এবং সরকারের ভ্যাট ও ট্যাক্স নিয়মিত প্রদান করে আসছি। ’
বাড়ি ও জমি দখলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে আশরাফ বলেন, ২০০৩ সালে খুলনা জজ কোট অর্থ ঋণ আদালতের নিলামের মাধ্যমে বাড়ি নম্বর-এ/২৮, রোড নম্বর-১৭ এর বাড়ি হ ৫ একর জমি আমি কিনি। রোড নম্বর-১৭, বাড়ি নম্বর-৩৭ যেটা বন্ধন কমিউনিটি সেন্টার নামে পরিচিত। এই জায়গাটি ১৯৯৪ সালে দৌলতপুর ওরিয়েন্টাল জুট মিলের মালিক মরহুম আবুল কালাম এর ওয়ারিশ স্ত্রী জেবুন্নাহার কলম, ছেলে জুলফিকার আলী রাজ, ছেলে কামরুজ্জামান কুমার, মেয়ে লাজ; যারা এখনও খালিশপুরে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন তাদের কাছ থেকে আমি কিনেছি।
‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পার্শ্বে হাউজিং প্রকল্পের ১১টি প্লট আছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। এক পরিবারের নামে একাধিক প্লট বাদ দেওয়ার আইন বা বিধান হাউজিং এস্টেট ও কেডিএতে নেই। সেখানে আমার নামে একাধিক প্লট বরাদ্দ পাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আবাসিক বা বাণিজ্যিক কোনো প্লটই পাওয়া যায় না। ’
তিনি বলেন, ‘বলা হয়েছে- মুজগুন্নি শিশু পার্কে আমার ব্যবসা-বাণিজ্য ও দোকান আছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তৎকালীন মেয়র তৈয়েবুর রহমান খালিশপুর শিশু পার্কটি ১৯৯৬ সালের ৭ জুন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে সেই সময় শিশু পার্কটি লিজ নেন জি এম গোলাম মোস্তফা আমি লিজ গ্রহণকারীর কাছ থেকে একটি দোকান মাসিক ৫০০ (পাঁচশত) টাকার ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে ভাড়া নিই। ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্কে যে ভয়জার বোর্ডের কথা বলা হয়েছে, তা ওয়ান্ডাল্যান্ড শিশু পার্কের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। যা দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। ১৯৯৬ সালে চিত্রালী বাজারে নজরুল সাহেবদের দুইটি দোকান যার একটি ২০০ টাকা ও আরেকটি ৩৭৫ টাকা প্রতি মাসে ভাড়া হিসেবে নিয়েছি। ’
আরও যেসব অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন এই আওয়ামী লীগে নেতা। তিনি বলেন, দলের সম্মেলন সামনে রেখে প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তবে কারা এই প্রতিপক্ষ-এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আশরাফুল ইসলাম বলেন, তকদীর বাবু খালিশপুরে বসবাস করেন। তার সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো সম্পর্ক নেই।
সব সময় তো তকদীর বাবু আপনার সঙ্গে থাকেন। এমনকি সংবাদ সম্মেলনেও তিনি উপস্থিত রয়েছেন- এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান তিনি।
এ সময় সাংবাদিকরা তার কাছে আরও প্রশ্ন করতে চান। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ বলেন, কেন আপনারা এসব প্রশ্ন করছেন? একই প্রশ্ন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করছেন? আমি আপনাদের কাছের লোক বলে আমাকে এত প্রশ্ন করবেন?
সংবাদ সম্মেলনে খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম ছানাউল্লাহ নান্নু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বাসার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্সি আব্দুল ওয়াদুদ, কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান লিটন, কাউন্সিলর ডালিম হাওলাদার, আলোচিত তকদীর বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
এমএ/