শামসুল আলম খান মিলনের রক্তদান ছিল সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ডা. মিলনকে হত্যার মধ্য দিয়ে এরশাদ সরকারের পতন ত্বরান্বিত হয় এবং প্রবল গণরোষের মুখে স্বৈরাচার এরশাদ অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
দীর্ঘ নয় বছর এরশাদের স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন গণসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী আত্মাহুতি দেন। তাদেরকে গুলি করে এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ডা. শামসুল আলম খান মিলনের হত্যাকাণ্ড ছিল একটি অন্যতম ঘটনা। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন টিএসসি এলাকায় তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদের গুপ্ত বাহিনীর গুলিতে তিনি নির্মমভাবে নিহত হন। মিলন হত্যার ঘটনায় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র সমাজের পাশাপাশি সব শ্রেণিপেশার মানুষ রাস্তায় নামেন।
শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে দূর্বার আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। ফলে এক ঐতিহাসিক ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতন ঘটে।
বরাবরের মতো এবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া সকল প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই উপলক্ষে বুধবার সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল চত্বরে ডা. শামসুল আলম খান মিলনের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত কর্মসূচি পালন করবে। অন্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠন একই স্থানে শহীদ ডা. মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য দলের নেতাকর্মীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি বিনীত আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
এসকে/এফএম