ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

আ’লীগ: থেমে গেছে জেলা সফর, তৃণমূলে ফের স্থবিরতা

শামীম খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১০
আ’লীগ: থেমে গেছে জেলা সফর, তৃণমূলে ফের স্থবিরতা

ঢাকা: ঘোষিত কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই থেমে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক জেলা সফর। ফলে দৃশ্যত স্থবিরতা দেখা দিয়েছে তৃণমূল পর্যায়ের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে।



অবশ্য দলের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, শোকের মাস আগস্ট এবং রোজার কারণে এই স্থবিরতা, ঈদের পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে।  

সাংগঠনিক স্থবিরতা কাটাতে এক মাসের টার্গেট নিয়ে গত ১৮ মার্চ ৭৩টি সাংগঠনিক জেলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরের কর্মসূচি শুরু হয়। প্রায় দুই মাস হলো এ কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে। এখনো ২০টির বেশি জেলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সফর বাকি রয়েছে যার মধ্যে চট্রগ্রাম বিভাগে ৬টি এবং বাকিগুলো ঢাকা বিভাগে।

জেলা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফরের সময় জেলায় জেলায় বর্ধিত সভার মাধ্যমে দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। সাংগঠনিক সফর না হলেও কোনো কোনো জেলা এরই মধ্যে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।

গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমত উল্লাহ খান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘গাজীপুরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফর হয়নি। আমরা সদস্য সংগ্রহ শুরু করেছি। ঈদের পর কার্যক্রম জোরদার করা হবে। সংগঠনিক সফরের ব্যাপারেও কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করবো। ’

নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম বলেন, ‘সাংগঠনিক কাজ বলতে সদস্য সংগ্রহ কিছুটা এগিয়েছে। ঈদের পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে। সাংগঠনিক অন্যান্য কাজও হাতে নেওয়া হবে। ’

২০০৮ এর ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০৯ এর ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের পর এটিই দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রথম সাংগঠনিক জেলা সফর। দল ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ দিন কেন্দ্রীয় নেতাদের সফর না হওয়ায় কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক দূরত্ব তৈরি হয়। স্থবিরতা দেখা দেয় সাংগঠনিক কার্যক্রমে। এ সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম জাতীয় এবং দলীয় দিবস পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের সংগঠনমুখী করে সাংগঠনকে গতিশীল এবং সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের এই সাংগঠনিক সফর কর্মসূচি নেওয়া হয়। ৩০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদস্য পদ নবায়ন করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সফরের পর সংগঠনিক পরিস্থিতির তেমন একটা উন্নতি হয়নি এবং সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমেও আশানুরূপ গতি সঞ্চার হয়নি বলে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা স্বীকার করেছেন।

তবে এ বিষয়ে কেউই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, ‘ক্ষমতার মোহে গা ভাসিয়ে দেওয়ায় সংগঠন স্থবির হয়ে আছে।   স্থবিরতা কাটিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করতে না পারলে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। ’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘ঈদের পর সব কিছু পুরোদমে শুরু করবো। বাকি জেলাগুলোর সফর শেষ করে সংগঠনকে গতিশীল করা হবে। ’

এদিকে বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

তিনি বলেন, ‘দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। দ্রুতই নেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। ’

দলের সাংগঠনিক স্থবিরতা বিষয়ে জানাতে চাওয়া হলে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘যে ক’টি জেলায় সাংগঠনিক সফর বাকি রয়েছে তা দ্রুতই শেষ করা হবে। সাংগঠনিক স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে সেটাও সমাধান করা হবে। শোকের মাস আগস্ট এবং রোজার কারণে এই সফরগুলো শেষ করা সম্ভব হয়নি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।