ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

মহাসচিব পাল্টাচ্ছে জাতীয় পার্টিতে!

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১০
মহাসচিব পাল্টাচ্ছে জাতীয় পার্টিতে!

ঢাকা: মহাসচিব পাল্টাচ্ছে জাতীয় পার্টিতে। দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এখন আর এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব পদে দেখতে চাইছেন না বলে জানিয়েছে দলের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র।



দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা ও বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এরশাদ নিজেই দলের নেতৃত্বে আমূল পরিবর্তন চাইছেন।

সূত্র জানায়, মহাসচিব পদে নতুন কাউকে মনোনয়ন দিয়েই ওই পরিবর্তনের সূচনা করতে চান তিনি।

তাই জাতীয় পার্টির পরবর্তী মহাসচিব কে হচ্ছেন তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে দলীয় পরিম-লে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা-কর্মী বলেছেন, এরশাদ নিজেও চেয়ারম্যান পদটি ছেড়ে দিয়ে তার ছোট ভাই বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী জিএম কাদেরকে ওই পদে বসাতে চান। ফ্রন্ট লাইনে আনতে চান জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদেরকেও।

তবে এ ব্যাপারে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ কম লক্ষ্য করা গেছে। এরশাদ নেতৃত্ব ছাড়লে এবং দলের নেতৃত্ব তার তার ছোট ভাইয়ের হাতে ন্যস্ত করা হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে মনে করছেন কর্মীরা।

তবে মনোভাব যাই থাকুক এ ইস্যুতে কোনো নেতার কঠোর অবস্থান নেওয়ার সম্ভাবনা কম।

এদিকে, মহাসচিব পদের হিসেব-নিকেশটাও সহজ নয়। রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরানো হলেও ওই পদে বসতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এমন নেতার সংখ্যাও অনেক।  

মহাসচিবের দায়িত্বে যখন ছিলেন, রুহুল আমিন হাওলাদার তখন দল গোছাতে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করেননি... এমন ধারণা বেশিরভাগ নেতাকর্মীর। সংগঠন নয়, ব্যবসা আর বিদেশ সফরেই তিনি বেশি সময় কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গত কয়েক বছরে দলীয় কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে পড়া আর দলীয় নেতাকর্মীদের ঝিমিয়ে পড়ার জন্য অনেকেই দায়ী করেন তাকে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রুহুল আমিন হাওলাদারের সাংগঠনিক তৎপরতায় অসন্তুষ্ট হয়ে এরশাদ অনেক আগেই তাকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। গত মে মাসে দলের গুরুত্বপূর্ণ ওই পদটিতে পরিবর্তন প্রায় চূড়ান্তই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এরশাকদে অনুরোধ করে ‘বিশেষ উপহারের বিনিময়ে’ সেযাত্রা টিকে যান রুহুল আমিন হাওলাদার।

মহাসচিব পদ থেকে রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দিলে ওই পদে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদকে বসানো হতে পারে---এমন আভাস দিচ্ছে একাধিক দলীয় সূত্র।

মহাসচিব হচ্ছেন কি না জানতে চাইলে কাজী ফিরোজ রশিদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘দলের চেয়ারম্যান আমাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু এ মুহূর্তে আমার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়। তাই রাজি হচ্ছি না। ’

কাজী ফিরোজ রশীদ আরও বলেন, ‘আমি আসলে মহাসচিব হতে চাই না। কারণ এ পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সময় দিতে পারছি না। আমার ব্যবসা আছে। রাজনীতির বাইরে ব্যবসা দেখতে হয়। ’

বিষয়টি জানতে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল খোদ এরশাদের সঙ্গেই। তবে কৌশলে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে এরশাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন আমি কিছু বলতে চাই না। মহাসচিব পদে পরিবর্তন হলে দেখতেই পাবেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।