বুধবার (১ জুলাই) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার মূল গেটের সামনে বাজেট প্রতিক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তারা।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, গত একশো বছরে পৃথিবীতে এ দুর্যোগে মহামারি আমরা দেখিনি।
লিখিত বক্তব্যে সংরক্ষিত আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) রুমিন ফারহানা বলেন, বাজেট অধিবেশন সংসদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। এ অধিবেশনে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে বাজেটের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ জাতির স্বার্থেই খুব জরুরি। করোনাকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেট অধিবেশন অতি সংক্ষিপ্ত করতে চেয়েছে সরকার। কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে এ অধিবেশন ডিজিটাল বা ভার্চ্যুয়ালি করার প্রস্তাব দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।
মাত্র একদিন (২৩ জুন) বাজেটের সাধারণ আলোচনা করা হয়েছে। এটা অকল্পনীয়। আমাদের বিশ্বাস করোনার মতো ভয়ঙ্কর একটা সঙ্কটে যে যাচ্ছেতাই বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটার সমালোচনা এড়ানোর জন্যই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করে তড়িঘড়ি করে শেষ করতে চেয়েছে সরকার।
করোনার সঙ্গে খুব সরাসরি জড়িত কয়েকটি খাত নিয়ে বিএনপির এ সংসদ সদস্য বলেন, স্বাস্থ্যখাতের বেহাল অবস্থার কথা আমরা জানতাম, কিন্তু করোনা এটাকে যাচ্ছেতাইভাবে প্রকাশ্য করেছে। স্বল্পমেয়াদে করোনা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত প্রয়োজনীয় চিকিৎসাকর্মী নিয়োগের কোনো রূপরেখা বাজেটে নেই। স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ দিয়েছে এটা দিয়ে বর্তমান সঙ্কট এবং ‘লকডাউন’ খুলে দেওয়ার কারণে সামনের দিনগুলোতে যে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে, সেটা কোনোভাবেই মোকাবিলা করা যাবে না।
করোনার কারণে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে মানুষের সংখ্যা যখন দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে, তখন আগের বছরের বাড়ানোর চাইতে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে কোনোভাবেই সঙ্কট মোকাবিলা করতে পারবে না। এ তুচ্ছ বরাদ্দ দেশকে এক দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেবে।
তিনি বলেন, করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল যে মন্দা থাকবে তাতে মানুষের আয় এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়ে রাজস্ব আয়ে চরম ঘাটতি তৈরি হবে। তাই বলা যায়, এ ঘাটতি গিয়ে ঠেকবে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকায়। ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকারের মূল পদক্ষেপ হবে ঋণ করা। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের এ অকল্পনীয় পরিমাণ টাকা ধার করার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ একেবারে শুন্যের কোঠায় চলে আসবে, যা কর্মসংস্থানের পথ একেবারেই বন্ধ করে দেবে। এতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না, তাই সরকারকে বিপুল পরিমাণের নতুন টাকা ছাপাতে হবে। এ টাকা ছাপানো উচ্চ মূল্যস্ফীতি তৈরি করে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেবে, যার ফল হবে মারাত্মক।
এসময় বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য মোশররফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম ও বিএনপি চেয়াপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২০
এমএইচ/ওএইচ/