ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শ্রমিকলীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি মাটি চুরির অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২১
শ্রমিকলীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি মাটি চুরির অভিযোগ ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর মাটি চুরি করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ও আমেরিকা প্রবাসী লুৎফর রহমান জুবায়ের বিরুদ্ধে।  

ক্ষমতাসীন দলের জন প্রতিনিধিদের নাম ভাঙিয়ে নদী খননের মাটি কোনো টেন্ডার ছাড়াই তিনি অবাধে বিক্রয় করছেন ইটভাটা ও বসতবাড়ির উঠান ভরাটে।

আবার এসব মাটি ড্রাম ট্রাকে করে অসহায় দরিদ্র মানুষের কৃষি জমির ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, কাক ডাকা ভোর থেকে দিনগত রাত পর্যন্ত মানিকগঞ্জ সদরের জাগীর পয়েন্টের দেড়গ্রাম এলাকার ধলেশ্বরী নদীর মাটি ড্রাম ট্রাকে করে বিক্রয় হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটা ও বসতবাড়ির আঙ্গিনা ভরাটে। ড্রাম-পিং স্পর্টের মাটি চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ জেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান জুবায়ের ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় কৃষকরা বাধা দিলেও কোনো তোয়াক্কা না করে চলছে মাটি চুরি। আবার এ কাজে যারা বাধা দিয়েছেন, তাদের নানাভাবে হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন জুবায়ের অনুসারীরা।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগীর ইউনিয়নের দেড়গ্রাম এলাকার এক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, আমার ফসলি জমির ওপর দিয়ে ড্রাম ট্রাকে করে মাটি না নেওয়ার জন্য আমি প্রথম দিকে বাঁধা দিয়েছিলাম। ওই সময় জুবায়ের নেতার বাহিনীরা এসে আমাকে হুমকি দেন যে— ‘কোনো কথা বললে এলাকা ছাড়া করে দেব। ’ যার কারণে কোনো কথা না বলে শুধু দেখে যাচ্ছি। আমরা অসহায় মানুষ, আমাগো কথা কেউ শুনবো না।  

একই গ্রামের আরও এক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষমতার দাপটে নদীর মাটি চুরির পাশাপাশি আমাদের অনেকের ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু জীবন রক্ষার ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছি না আমরা।  

মাটি চুরির বিষয়ে অভিযুক্ত জেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান জুবায়ের বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে ধলেশ্বরী নদী খননের মাটি কোথাও বিক্রি করা হয়নি। তবে  আমি তো মাটি চুরি করছি না, নিজের প্রয়োজনে নিয়েছি।  

জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় পদবি বহন করে কোনো অবৈধ কাজ করলে, ওই কাজের দায়ভার তাকেই বহন করতে হবে।  

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মানিকগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ধলেশ্বরী নদী খননের মাটি বিক্রির সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরে মাটি বিক্রির বিষয়টি নিষেধ করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জুবায়েরকে নোটিশ করা হবে।  

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে  বলেন, নিলাম ছাড়া সরকারি মাটি ক্রয়-বিক্রয়ের কারও কোনো সুযোগ নেই। তবে যেহেতু জুবায়ের সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ফলে বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।