ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ’বীর উত্তম’ খেতাব দেওয়া হয়। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর তার রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনও এ বিষয়টি জানি না। তবে যদি এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অবমাননা। এটা বাংলাদেশের মানুষ ও সারাবিশ্বের মানুষ জানে যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৬ তারিখ সকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে প্রথম রিভল্ট করেন। তারপরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে গিয়ে নিজে প্রথমে স্বাধীনতার ডাক দেন, পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্বাধীনতার ডাক দেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জিয়াউর রহমান প্রথম সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছেন। তিনি প্রথম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করেছেন। তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি জেড ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন। তার নামেই প্রথম জেডফোর্স গঠন করা হয়। তিনি স্বাধীনতার পরে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ খেতাব ‘বীর উত্তম’ পেয়েছেন। এখন ৫০ বছর পরে যদি সরকার এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা হবে (আমি আগেই বলেছি) মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ওপরে চরম অবমাননা। এটা হবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটা উদাহরণ। অত্যন্ত খারাপ একটা নজির হবে। এ ধরণের সিদ্ধান্ত এ দেশের জনগণ মেনে নেবেন না। জনগণের কাছে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক এবং শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই থাকবেন। তারা যতই খেতাব মুছে দিতে চেষ্টা করুক, জনগণের মন থেকে কখনও মুছে দেওয়া সম্ভব হবে না।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিএনপির কোনো কর্মসূচি থাকবে কি না জানতে চাইলে বিএনপির প্রবীণ এই নেতা বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও জানি না। যেহেতু জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি না সেটা জানি না। সিদ্ধান্ত হলে আমরা দলের মধ্যে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।
বিএনপির অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে দশটায় বাংলানিউজকে বলেন, এটাতো মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে আগুন লাগিয়েছে। জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি বাতিল মানে হলো মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করা, অস্বীকার করা। দলমত নির্বিশেষ সব মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা। এটা জনগণ মানে না, মানবেও না।
আপনি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা সে হিসাবে এ বিষয়টা কিভাবে দেখেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধ দাবি করি না। যুদ্ধটাকে সম্মান করি। আমি যুদ্ধ করেছি সেটা বিষয় না, তবে জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার শামিল।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এমএইচ/এমআরএ