ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

’৯০ এর পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই: জি এম কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
’৯০ এর পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই: জি এম কাদের জি এম কাদের, ফাইল ফটো

ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, একুশের ধারাবাহিকতায় মুক্তির জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু এখনও আমরা মুক্তি পাইনি।

পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে একদিকে বৈষম্য বেড়েছে, অপরদিকে জবাবদিহিতা নেই কোথাও। স্বাধীনতার আগে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বৈষম্য ছিল কিন্তু ৯০ সালের পর থেকে দেশের মানুষের সঙ্গে বৈষম্য করছে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে। দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে দলীয়করণ চলছে। উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে তারাই চাকরি ও ব্যবসায় সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ সব অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংবিধানে ৭০ ধারা সংযোজনের কারণে সরকার প্রধানের অধীনে দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও নিম্ন আদালত। আবার উচ্চ আদালতের নিয়োগ থেকে অনেক কিছুই সরকার প্রধানের প্রভাব থাকে, যাতে কোনোমতেই গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়। তাই ’৯০ সালের পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই।      

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের মানুষ সব বৈষম্য থেকে মুক্তি চায়। দেশের মানুষ তাদের অধিকার পেতে চায়। ন্যায় বিচারভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা ফিরে পেতে চায়, আইনের শাসন চায়।

জি এম কাদের বলেন, ভাষা আন্দোলন আমাদের অন্যায়-অবিচারের কাছে মাথা নত না করে প্রতিবাদ করতে শিক্ষা দেয়। তাই জাতীয় পার্টি প্রতিটি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের পক্ষে আপসহীনভাবে প্রতিবাদ করবে। দেশ ও মানুষের অধিকারের প্রশ্নে জাতীয় পার্টি কখনোই আপস করবে না। নির্ভয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতীয় পার্টি সব সময় সামনের সারিতে থাকবে। গণমানুষের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বে জাতীয় পার্টি।

আলোচনার সভার আগে ও পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদেরের তত্ত্বাবধানে এবং সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদের উপস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্যরা। এ সময় ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে পরিবেশিত দেশের গান ও কবিতায় মুগ্ধ হয়েছেন উপস্থিত নেতারা।

এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু তার বক্তব্যে সৈয়দপুরে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানান।  

তিনি বলেন, সৈয়দপুর পৌর নির্বাচনে অন্যায়ভাবে আধিপত্য বিস্তার ও নির্বাচনকে কলুষিত করতেই গত শনিবার রাত ১১টায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে।  

শেরিফা কাদের বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছে। কোনোভাবেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না। সৈয়দপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে ব্যর্থ হলে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরু করবে জাতীয় পার্টি।  

এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, জাতীয় পার্টি হচ্ছে সাধারণ মানুষের সংগঠন। জাতীয় পার্টি সাহসী মানুষের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। জাতীয় পার্টি কখনো মাথানত করেনি, জেল-জুলুম ভয় করে না। গণমানুষের স্বার্থে সব ভয় উপেক্ষা করে রাজনীতির মাঠে থাকবে জাপা।

সভায় কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, জাতীয় পার্টি অসীম সম্ভাবনাময় একটি রাজনৈতিক শক্তি। জাতীয় পার্টিতে কখনোই নেতৃত্ব সংকট হয়নি, হবেও না। দেশের মানুষের কাছে জাতীয় পার্টি আস্থার সংগঠন।

মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, হেনা খান পন্নি, ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ইকবাল হোসেন তাপস, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পার্টির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
এসএমএকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।