ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল প্রসঙ্গ বাদ দেওয়ায় বিএনপির আপত্তি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২১
পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল প্রসঙ্গ বাদ দেওয়ায় বিএনপির আপত্তি

ঢাকা: বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ কথাটি বাদ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২৩ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্র্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, যেটা আমাদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বলা যেতে পারে কনসেনসাস জনগণের, সব সরকারের যে, ইসরায়েল আমাদের শত্রু-পৃথিবীর শত্রু। কারণ তারা মানবাধিকারকে ধ্বংস করছে। আমরা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি, সকলে করে যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং তার মানুষগুলোও মানুষ। বিশেষ করে শিশুরা। প্রায় একশো শিশুকে হত্যা করা হয়েছে গত কয়েকদিনে। আপনাদের মনে আছে কয়েকবছর আগে প্রায় তিন লাখ শিশুকে হত্যা করা হয়েছিল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ইসরায়েল আসলে মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা পৃথিবীর জন্য এখন একটা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার কেন নতুন করে প্রেম করতে যাচ্ছে ইসরায়েলের সঙ্গে? এর কারণ আমি একটা যোগসূত্র দেই আপনাদের।  কয়েকদিন আগে আল-জাজিরাতে একটা রিপোর্ট হয়েছিল। সেই রিপোর্টে এসেছিলো যে, একটা বিশেষ সার্ভিলেন্সের যে ডিভাইস বা যন্ত্র, এই যন্ত্র অরিজিনালি ইসরায়েল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেজন্য এখন জনগণের মাঝে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে তাহলে কি ইসরায়েলের সঙ্গে সরকার আবারো ওই ধরনের কোনো চুক্তি করতে যাচ্ছে বা কিছু করতে যাচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, আমরা সবাই জানি যে, ইসরায়েল কিন্তু গোয়েন্দাবৃত্তিতে পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ওটা করে কিন্তু সে এখনো মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়ে আছে। সুতরাং এই বিষয়গুলো জনগণ অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে, দেখছে, লক্ষ্য করছে যে, কোন দিকে যাচ্ছি আমরা? অলরেডি তো গেছি। অন্ধকার মধ্যযুগীয় বর্বরতার দিকে যেখানে মানুষের ন্যূনতম অধিকারটুকু থাকবে না।

ইসরায়েলের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। বরাবরই আমরা ইসরায়েলের বিরোধী অবস্থানে আছি।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি গতকাল বলেছেন, বিএনপি গণমাধ্যমের বন্ধু সেজে সাংবাদিকদের উস্কানি দিচ্ছে। এটা একেবারেই একটি মনগড়া এবং নিজেদের অপরাধগুলোকে ঢাকার জন্য একটি মন্তব্য। আওয়ামী লীগের সাংবাদিকতা, মুক্ত স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের প্রতি আচরণ-ব্যবহার-এটা দেশের সকল মানুষ জানে। ১৯৭৫ সালে দেশে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সেই বাকশাল প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই সমস্ত পত্রিকাগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। মাত্র চারটা পত্রিকা চলবে বলা হয়েছিল, সেই চারটা পত্রিকা তাদের নিজস্ব পত্রিকা। তাতে অসংখ্য সাংবাদিক বেকার হয়ে গিয়েছিলেন, তারা কর্মচ্যুত হয়েছিলেন।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের সময়ে বিভিন্ন পত্রিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার কাছে মনে হয় যে, এটা তাদের মজ্জাগত ব্যাপার। তারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না, তারা সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা তারা (আওয়ামী লীগ) আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করেছে ১৯৭৫ সালে, আইন করে তারা বন্ধ করেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ টাইমস, বিচিত্রাসহ ৪টি পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০০৮ সালে তারা চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি, একুশে টিভি আক্রমণ করেছে এবং বন্ধ করে দিয়েছে। একের পর এক আমার দেশ পত্রিকা, শীর্ষ কাগজ, ৩৭টি অনলাইন—এগুলো সব বন্ধ করে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মহানগর মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, কাজী আবুল বাশার, আবদুল আলিম নকি, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।