ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে রিট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২১
জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে রিট

ঢাকা: জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে রিট করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখের নথি তলবের বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যে বিষয়টার (খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ) কথা বলা হয়েছে- এটা তো ফেইক। এভার কেয়ারের যে রিপোর্টের কথা বলা হয়েছে এ ধরনের কোনো রিপোর্টই এভার কেয়ার করেনি। যে তারিখটা বসিয়েছে তারা এটা ফলসলি করা হয়েছে। যে কাগজটা তারা দিয়েছে তার উপরে আদালত একটা হুকুম দিয়েছে। এ হুমকটা আমি জানি না বিং এ ল‘ইয়ার… এটা কীভাবে দিলেন?

তিনি বলেন, দেশে তো রাজনীতি নেই। এখন উদ্দেশ্য একটাই- এ ধরনের (জন্মদিন) ইস্যুগুলো তুলে এনে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা, ডায়ভার্ট করার চেষ্টা করা, মূল সমস্যা থেকে জনগণকে ভুল দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। আর কিছুই না। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এসব তারা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে একদলীয় শাসনে দেশ চলছে। এটা থেকে প্রমাণিত হয়- জুডিশিয়ারি ইজ নট ফ্রি। জুডিশিয়ারির কিন্তু এটা আমলেই নেওয়া উচিত ছিল না। দে শুড হেল বিন টোটালি রং। যে ভদ্রলোক করেছেন তিনি তো পারসোনালি সংক্ষুব্ধ না। আমি যতটুক আইন বুঝি যে, রিটটা তখনই হতে পারে ইফ এনি ওয়ান ইজ পারসোনালি এফগ্রিভ। ব্যক্তিগতভাবে যদি তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন, নিজে সংক্ষুব্ধ হন তখন হি কেন গো ফর এ রিট। এটা তা না। উনার জন্মদিনের ব্যাপারে কী আছে, না আছে এটা তো তাদের দায়িত্ব না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন- বহুলোকের কিন্তু জন্ম তারিখ আসল একটা আর সার্টিফিকেটে তারিখ আরেকটা আছে। কারণ হচ্ছে বিশেষ করে আমাদের জেনারেশনের সময়ে তখন সঠিকভাবে বাবা-মায়েরা জন্ম তারিখ মনে রাখতে পারতেন না জন্ম কবে হয়েছে, ডায়েরি-টায়েরি ম্যানটেইন করতেন না। ফলে দুই রকম হতে পারে। এটা কোনো দিন ইস্যু হতে পারে না। দিস ক্যান বি ইস্যু। হ্যাঁ এখন পার্টিকুলার একটা ডেটে কেউ জন্ম নিতে পারবে না- এটা একটা ঘোষণা দিয়ে দিলে তো হয়ে যায়। নো বডি ওইদিন …, হিসেব করে আপনাকে সন্তানের জন্মদানের কথা চিন্তা করতে হবে। এছাড়া তো উপায় নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির শেকড় আছে বলেই বিএনপি টিকে আছে। এতো নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু মাত্র এ দলের ‘ডিপ রুট’, মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীর চলে গেছে বিএনপি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এতো বেশি ঋণ নির্ভর হয়ে পড়ছে অর্থনীতি এবং এটা এখন শেষ সীমায় এসে পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে গত ১ যুগ যাবৎ সরকারের ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন চলছে। যার প্রভাবে এক ধরনের মন্দাভাব চলছে, উৎপাদন খাত শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর সব ক্ষেত্রে আদায় কম। আয় কমে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। একগুচ্ছ বৃহৎ মেগা প্রকল্প, আছে দৈনন্দিন খরচ। বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ব্যয় অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে সরকার। সব মিলিয়ে ব্যয় বেড়েই চলেছে।

সারা দেশের জেলায় স্কুল-বিদ্যালয়ের বড় বড় গেট করার বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখবেন, বিভিন্ন স্কুলে বড় বড় গেট তৈরি করা হচ্ছে। এটা কোনো অগ্রাধিকার হতে পারে না। ওই টাকা দিয়ে যদি দু্’টি ক্লাস ঘর করে দিত তাহলে বাচ্চারা ভালোভাবে পড়তে পারতো।

দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেখুন দুর্নীতি কোন মাত্রায় গেছে যে, পাবনার মতো জেলা শহরের একটা কোম্পানির কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে ভ্যাটের জন্য। ব্যবসায়ীদের একটা নিরব কান্না আছে। এভাবে তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চলছে। আমার একজন পরিচিত ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে কাস্টমস ডিপার্টমেন্ট থেকে। সে বলছে যে, এতো টাকা আমি কোত্থেকে দেব? দিতে পারবো না। যেহেতু সে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে পারেনি তাকে সেজন্য ১১ কোটি টাকার ইনকাম ট্যাক্স ধরিয়ে দিয়েছে। পরে সে আপিল-টাপিল করে সেটা কমিয়ে এনেছে প্রায় এক কোটি টাকায়। ১১ কোটি আর ১ কোটি। এটা তো আমি একজনের কথা বললাম। দিস ইজ হেপেনিং এভরি হোয়ার, এভরি খাত। রিমান্ডে নিয়েও নির্যাতন না করার জন্য আলাদা অর্থ দিতে হয় বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমার ফেসবুক, টুইটারের রহস্য নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। আমি অনেকবার বলেছি। আমি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চিঠি দিয়েছি, উকিল নোটিশ দিয়েছি। তারপরও দেখি যে, আমার নামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট খোলা আছে। আমরা যতদূর জানি যে, সার্ভিলেন্সে এ সমস্ত মিডিয়ায় যখন গোয়েন্দারা ঢুকে তখন তারা বিভিন্ন রকম তৈরি করে। এটা শোনা কথা। কোথায় যাবো বলেন? আমার কোনো ফেসবুক নেই। যেগুলো আছে এগুলো ফেইক। আমি নিজে একবার বিবৃতি দিয়ে বলেছি। থানায় জিডি করেছি, মামলা করেছি, উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২১
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।