ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অপরিকল্পিত লকডাউনে বুভুক্ষু মানুষের আহাজারি চলছে: প্রিন্স

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২১
অপরিকল্পিত লকডাউনে বুভুক্ষু মানুষের আহাজারি চলছে: প্রিন্স

ঢাকা: বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, সরকারের অপরিকল্পিত চলমান লকডাউনে বাংলাদেশের জনপদে নিরন্ন ও বুভুক্ষু মানুষের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দিনমজুর ও নিন্ম আয়ের মানুষ।

অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত নিন্ম আয়ের ও কর্মহীন মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য ও অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রিন্স।

তিনি বলেন, লকডাউনে কাজ না থাকায় ছেলে-মেয়েদের মুখে ভাত তুলে না দিতে পেরে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর মুক্তারপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে দিনমজুর দ্বীন ইসলাম আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। নির্মম ও বেদনাদায়ক এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ জুলাই দুপুরে। অথচ সরকারের মন্ত্রী-কর্মকর্তারা হরহামেশাই বলে যাচ্ছেন, তারা পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করেছেন, কেউ না খেয়ে নেই, না খেয়ে মারা যাবে না কেউ, ইত্যাদি ইত্যাদি। মুক্তারপুরে দ্বীন ইসলামের মতো দেশের অগণিত মানুষ এ ধরনের নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখী। এই দায় কার? অবশ্যই এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। শুধু তাই নয়, সরকারের অব্যবস্থাপনা, ভ্রান্ত নীতি ও অবহেলা-উদাসীনতায় করোনা চিকিৎসায় যে সংকট দেখা দিয়েছে, অক্সিজেনের অভাবে প্রতিদিনই মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে, এই মৃত্যুর দায়ও সরকারকেই নিতে হবে।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, সরকার করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সহায়তার নামে যে বরাদ্দ দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা জনগণের সাথে তামাশা করা ছাড়া কিছুই নয়। ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত যে কয়বার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা কোনো সময় মাথাপিছু ১১ পয়সা, কিংবা ১৪ গ্রাম চাল। বর্তমানেও চলমান লকডাউনে যে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে তা মাথা পিছু ৭ দিনের হিসাবে ১৩ টাকারও কম। এখন বলা হচ্ছে ঈদের আগে দশ কেজি করে চাল দেওয়া হবে, তাহলে ঈদের আগ পর্যন্ত এই লকডাউনে মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে। প্রকৃত অর্থে, এই বরাদ্দও এখন পর্যন্ত ছাড় হয়নি এবং তা জনগণের হাতে পৌঁছে নাই।

প্রিন্স বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা তাদের ব্যর্থতা আড়াল করতে প্রতিদিনই বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। তারা নাকি দূরবীন দিয়ে বিএনপিকে খুঁজে পাচ্ছেন না, বিএনপি নাকি মিথ্যাচার করছে। এসব কথা বলে তারা দেশের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে ব্যর্থ অপচেষ্টা করছেন।

অবিলম্বে অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিক, হকার, দোকান কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুরসহ নিন্ম আয়ের ও কর্মহীন মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য ও অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।

একইসাথে অতিদ্রুত সবাইকে করোনা টিকাদানসহ বিরাজমান করোনা চিকিৎসা সংকট নিরসন কল্পে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ভেন্টিলেটর, আইসিউ বেড স্থাপন এবং চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ সরকারি খরচে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান প্রিন্স।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।