ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ঝুঁকি সত্ত্বেও অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে কঠোর লকডাউন শিথিল করেছে সরকার

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২১
ঝুঁকি সত্ত্বেও অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে কঠোর লকডাউন শিথিল করেছে সরকার

ঢাকা: জীবিকার স্বার্থে অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে কঠোর লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্বেও এর কোনো বিকল্প ছিল না বলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।

 

দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বর্তমানে ভয়ঙ্কর পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। গত কয়েক দিন ধরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ থেকে ২৩০ এর মধ্যে অবস্থান করছে। দিনে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। শনাক্তের হার শতকরা ৩০ শতাংশের কাছাকাছি।  

গত ১১ জুলাই ২৪ ঘন্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৩০ জন। গত পর দিন ১২ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৬৮ জন। বৃধবার(১৪ জুলাই) মারা গেছেন ২১০ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৩৮৩ জন। গত ১ জুলাই থেকে টানা ১৪ দিন কঠোর সার্টডাউনের পরও পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ঈদকে সামনে রেখে সরকার ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত র্স্টাডাউন শিখিল করে মার্কেট, দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, পশুর হাট ও গণপরিবহন চালুর ঘোষণা দিয়েছে।  

সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এতে মানুষের অবাধ বিচরণের ফলে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে আঙ্কা করছেন তারা।  

সরকারের নীতিনির্ধারকরাও বিধিনিষেধের এই সিথিলতাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেই মনে করছেন। তবে মানুষের জীবনের পাশাপাশি জীবিকার স্বার্থে অর্থনৈতিক দিককেও এই মুহূর্তে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। আর এটা দেখতে গিয়ে শার্টডাউন সিথিল করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প সরকারের হাতে নেই বলে তারা মনে করেন।  

সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানান, ঈদুল আজহার সামনে রেখে পশুর একটা বিশাল ব্যবস্যার বিষয় রয়েছে। এর সঙ্গে বহু মানুষ বিভিন্নভাবে জাড়িত। খামারিরা তাদের পশুর পেছনে সারা বছর প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এই সময় সব কিছু বন্ধ থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য বিরাট ক্ষতি হবে, অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদিও বিধিনিষেধ সিথিল করায় সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বড় তারপরও সরকারকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, দেশের অর্থনীতির বিষয়টিও ঠিক রাখতে হবে। লাখ লাখ খামারি একক একটি গরুর পেছনে ৫০ হাজার, ১ লাখ, দেড় লাখ টাকা বিনিযোগ করেছেন। এই ঈদের সময় যদি তারা বিক্রি করতে না পারেন আবার গরুর পেছনে খরচ করতে হবে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ বিষয়টিও চিন্তা করতে হচ্ছে। তাই ঝুঁকি নিয়েই এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। যেটা আমরা বলছি জীবন-জীবিকার সমন্বয়। তবে মানুষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে।

এ বিষয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জীবনের পাশাপাশি জীবিকার কথাও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে। ঈদুল আজহায় পশুর খামারিদের বিষয় আছে। সব ব্যবসায়ীরাই অপেক্ষায় থাকে ঈদের সময় ব্যবসা হবে। দীর্ঘ দিন ধরেই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অর্থনীতির দিকটাও তো অবশ্যই সরকারকে দেখতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২১ 
এসকে/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।