ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ব্যর্থ সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার নৈতিক অধিকার নেই: নজরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২১
ব্যর্থ সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার নৈতিক অধিকার নেই: নজরুল

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সজীব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানার মর্মান্তিক ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য কার্যকর  প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দায় রাষ্ট্রের। যে সরকার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে কিংবা ব্যর্থ হয়, সেই সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার নৈতিক অধিকার থাকে না।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রূপগঞ্জের হাসেম ফুড কোম্পানিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শনের পর এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত হয়।

নজরুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানাটি পরিদর্শনকালে কর্মহীন শ্রমিকদের কাজের প্রত্যাশায় দাবি জানাতে দেখেছি। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন বেতনহীন এসব শ্রমিকদের অবিলম্বে প্রাপ্য পরিশোধ করা জরুরি। একই সাথে আমরা মনে করি, সজীব গ্রুপের প্রত্যেকটি কারখানা যথাযথ পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কর্মোপযোগী করে যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের কাজে ফেরার পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার। যাতে তারা পরিশ্রম করে জীবিকা অর্জন করতে পারে।

তিনি বলেন, প্রত্যেক নাগরিকের বাঁচার অধিকার, কাজ করলে ন্যায্য মজুরির অধিকার এবং নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মস্থলের অধিকার শুধু মৌলিক মানবাধিকার নয়, আমাদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন রাষ্ট্রে সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার। এসব অধিকার বাস্তবায়নের তদারকির দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু গত ৮ জুলাই পুড়ে কয়লা হওয়া ৪৯টি লাশের স্তূপে সারা বিশ্ব আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের অবহেলা, অক্ষমতা ও ব্যর্থতার স্তূপ হিসাবেই দেখছে। অকালে ঝরে যাওয়া এসব নিষ্পাপ প্রাণের একটা বড় অংশই ছিল শিশু ও কিশোর-কিশোরী। আইন অগ্রাহ্য করে যারা এদের কাজে দিয়েছে তাদের অপরাধের পাশাপাশি রাষ্ট্রযন্ত্রের যারা তা রোধ করতে পারেনি তাদের অপরাধও কম নয়।

কয়েক বছরে বিভিন্ন শিল্পে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের হিসাব তুলে ধরে নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালে গরিব অ্যান্ড গরিব সুয়েটার ফ্যাক্টরিতে ২১ জন এবং স্পোর্টস ওয়ার ফ্যাক্টরিতে ২৯ জন, হামীম গ্রুপে ২৯ জন; ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনসে ১১২ জন, ২০১৩ সালে স্মার্ট এক্সপোর্টে ১২ জন, সুংহাই সুয়েটারে ৭ জন এবং আসওয়াক কম্পোজিটে ৭ জন; ২০১৫ সালে স্টাইরোফোম প্যাকেজ ফ্যাক্টরিতে ১৩ জন; ২০১৬ সালে টাম্পাকো ফয়েলে ৩৪ জন, ২০১৭ সালে মাল্টি ফ্যাবস গার্মেন্টসে ১৩ জন, ২০১৯ সালে প্রাইম প্লেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ১৩ জন এবং ২০২১ সালে হাশেম ফুড কোম্পানি লিমিটেডে ৫২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও ২০১৩ সালে রানা প্লাজায় ভবন ধসে নিহত হয়েছেন ১১৩৬ জন। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অসংখ্য শ্রমিক আহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন অনেক। বেশির ভাগ কারখানায় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র কিংবা পরিচিতি পত্র না দেওয়ায় প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।