ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ঝিলংজা বনভূমি রক্ষার দাবি সিপিবির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
ঝিলংজা বনভূমি রক্ষার দাবি সিপিবির

ঢাকা: কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে ঝিলংজা বনভূমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি করার উদ্যোগ বাতিল করে বনভূমি রক্ষার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন।

বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি কক্সবাজারের ঝিলংজা বনভূমি। কক্সবাজারের এ বনভূমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তা বে-আইনি এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। আমরা সরকারের গণবিরোধী এ উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এ উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানাই।

তারা বলেন, ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার ঝিলংজা বনভূমিকে ‘রক্ষিত বনভূমি’ বলে ঘোষণা করে। বনবিভাগ এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। ২০০১ সালে দেশের বনভূমির যে তালিকা করা হয়, তাতেও ঝিলংজা মৌজা বনভূমি হিসেবে আছে। বরাদ্দ দেওয়া জমির ৪০০ একর পাহাড় ও ৩০০ একর ছড়া বা ঝরনা। সেখানে অনেক দুর্লভ প্রজাতিসহ ৫৮ প্রজাতির বৃক্ষ আছে। এছাড়া বন্য প্রাণীর মধ্যে আছে এশীয় বন্য হাতি, বানর, বন্য শূকর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও পাখি। এ কারণে বন বিভাগ থেকে ‘এই ভূমি বন্দোবস্তযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে, বন বিভাগের আওতাধীন এ জমিকে ভূমি মন্ত্রণালয় বে-আইনিভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ইজারা দিয়েছে।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, বরাদ্দ দেওয়া এলাকা প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ। রক্ষিত বন ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাকে স্থাপনা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া অবৈধ। কিন্তু ইজারা দেওয়ার উদ্দেশে দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ এ বনভূমিকে অকৃষি খাসজমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া জমির বাজারমূল্য চার হাজার ৮০০ কোটি হলেও, দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা।

নেতারা বলেন, গণবিরোধী সরকারের ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নের নামে প্রকৃতি-জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের উৎসব চলছে। বনভূমি রক্ষার বদলে, স্থাপনা নির্মাণের জন্য বনভূমি ইজারা দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়, বনভূমি উজাড় করা হচ্ছে। এভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশকে বিপন্ন করে তোলা হয়েছে। উন্নয়নের নামে পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

সিপিবির পক্ষ থেকে মানুষ ও প্রকৃতি বাঁচানোর লড়াইয়ে দেশবাসীকে সামিল হওয়ারও উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২১
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।