ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন করা হলেও সরকার অমানবিকভাবে উদাসীন ও নির্বিকার।
তিনি বলেন, দেশনেত্রীকে বিদেশে সুচিকিৎসার জন্য পাঠাতে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী ধারাবাহিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারের নির্দয় আচরণের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আক্রমণ, হামলা ও নির্যাতনসহ সব ধরনের অত্যাচারের যন্ত্র নামিয়ে আনা হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর।
মঙ্গলবার (২৩নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার দাবিতে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে নরসিংদী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খায়রুল কবির খোকন কার্যালয় থেকে কোনোভাবে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও নেতাকর্মীরা অনেক রাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
এছাড়া দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার দাবিতে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু পুলিশের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হন। হামলায় আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।
সোমবার (২২ নভেম্বর) বরগুনা জেলা বিএনপির সমাবেশে পুলিশ লাঠিচার্জ করে অনেককে আহত করে এবং সমাবেশ থেকে ছাত্রদলের রুবেল শিকদার, মিজনুর রহমান, সিয়াবসহ ৭ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন তোফাকে গ্রেফতার করা হয়।
নাটোর এবং সাতক্ষীরায় সমাবেশে পুলিশী হামলা ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা বিএনপি অফিস ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করে। ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক নাসিরউদ্দিন নাসির, মহসিন হল ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাউসার আহমেদ আশিক এবং সূর্যসেন হল ছাত্রদল নেতা মিনারুল ইসলাম রাহাতসহ আরও অনেকেই সোমবার কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশী হামলায় আহত হয়েছেন।
এছাড়াও গত ২০ নভেম্বর সারাদেশে বিএনপির গণ-অনশন চলাকালীন খুলনা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও সাতক্ষীরা জেলায় পুলিশ ব্যাপকভাবে হামলা চালায় এবং অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। পটুয়াখালী জেলা বিএনপির গণ-অনশনে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাকারিয়া ও জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি ভিপি শাহিনসহ অসংখ্য নেতকর্মী আহত হয়েছেন।
রিজভী আরও বলেন, সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা এসব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর নির্দয় হামলা এবং নেতাকর্মীদেরকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে নাজেহাল করছে। সরকারের উদ্দেশ্য রহস্যজনক, তারা দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে গভীর চক্রান্তে মেতে উঠেছে। দেশনেত্রী যাতে সুস্থ হতে না পারেন সে জন্যই বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে গড়িমসি করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড